হারিয়ে ফেলেছি শৈশবস্মৃতি কালের গভীর পেটে,
বালির প্রাসাদ মরু সাহারায় স্মৃতি খুঁজি তবু ঘেঁটে।
স্মৃতিগুলো সব ভেসে উঠে আজো মনের বর্ষাকালে,
কতো-না মধুর রঙিন সময় কাটতো যে আবডালে।


গলাগলি যতো বন্ধু-স্বজন এক হৃদয়ের জুটি,
জীবিকার টানে ছুটেগেছে দূরে মায়ার প্রাসাদ টুটি।
মাথার গভীরে এ্যালবাম ঘুটে স্মৃতিগুলো খুঁজি ফের,
ফেলে আসা সেই শৈশবস্মৃতি ফিরে পেতে চাই ঢের।


কোথায় গেল সে কানামাছি খেলা বৌছি,গট্টা,চোর?
টুকিভূক খেলে পাতার বাঁশিতে চর্কা ঘোরানো দৌড়।
পাতার ঘড়িতে সন্ধ্যা নামত ছিল না মননে ক্রোধ,
ঘুড়ির সুতোই খবর দিতাম, নেমে আসা অনুরোধ।


বউ তোলাতোল্, খাইটি খেলায়, দেখিনাই অহমিকা,
শৈশবস্মৃতি হারিয়ে শ্মশানে পেয়েছি যে মরীচিকা।
বৈষম্যের ছিলো না বালাই ছেলে মেয়েদের মাঝে,
হাতে-হাত ধরে কেটে যেত দিন খেলার দীর্ঘ সাজে।


লাটিম খেলার সভার মঞ্চে আ'লে ফেড়ে করা চলা,
কোথায় গেলো সে বন্ধুমহলে আড্ডা দেবার বেলা?
সন্ধ্যা নামলে ল্যাম্প জ্বালিয়ে পড়তে বসার স্মৃতি,
লিখতে গেলেই কলম চিবানো গুনগুনানির গীতি।


বইয়ের ভাঁজে ময়ূর ধাড়ির ছানা পাবার নেশায়,
প্রতিদিন কত যত্ন করে যে তেলের পরশে ভেজাই।
বনভোজনের ডিমের কুসুম এখনো নয়নে ভাসে,
ধূলোর নিবাসে পুতুলের বিয়ে খেতাম যে বার মাসে।


চারানা দামের বরফ খেয়েছি চেটেচেটে বহুক্ষণ,
গুটিগুটি আম পকেট ভরেছি মনে পড়ে তো এখন।
টাকায় চারটি লজেন্সের স্বাদ লেগে আছে জিহ্বায়,
পটকা ফুটিয়ে পাখি ঠোকা স্মৃতি হারিয়েছি মোহনায়।


কতই না সব বর্ণিল স্মৃতি হাতছানি দিয়ে ডাকে,
সংসার বাঁকে লাফিয়ে পড়েছে বন্ধুরা ঝাঁকে ঝাঁঁকে।
খুঁজেখুঁজে চোখ অন্ধ হলেও পাবো না যে সেইদিন,
তিলেতিলে গড়া শৈশবস্মৃতি, আছে সকলের ঋণ।


(বিঃদ্রঃ খেলার নামগুলো আঞ্চলিক  ভাষায় ব্যবহার করা হয়েছে।) মাত্রাবৃত্তে