'একটি দিনের জন্য ছুটি নিয়ে আয়
ছেলেটার খুব অসুখ
কদিন হলো খেতে চায়না কিছুই;
আমারও ওষুধ প্রায় শেষ
আনতে যেন ভুলিসনে মা।'


ফোন রেখে ফুঁপিয়ে কাঁদে মালতী
ছেলের কথা খুব মনে পড়ে
আসার কালে, কত কাঁদলো মা মা বলে 
তিন বছর বয়স ওর
মাকে ছেড়ে কেমনে থাকে!


মালতীর স্বামী আবার বিয়ে করেছে
মালতীর খোঁজ রাখেনা সে
গার্মেন্টসে চাকরি নিয়েছে মালতি
জীবিকার জন্য
জীবন-সংগ্রামের জন্য।
সংসারে তাঁর, বৃদ্ধ মা আর অবুঝ সন্তান
তারি সামান্য আয়ে চলে তিনটি জীবন।


কাজ রেখে মালতী অফিস রুমে যায়
অনুনয় করে বলে...
'স্যার আমারে একদিনের ছুটি দেন
পোলাডার খুব অসুখ,বাড়ি যামু
ডাক্তার দেহামু পোলারে'


ছুটি মেলে মালতীর-
অফিস শেষে সোজা ট্রেশনে যায়
অনেক ক্ষণ অপেক্ষার পর
বকুলপুরের ট্রেন আসে সন্ধ্যায়।


ট্রেনে উঠে মায়েরে ফোন দেয় মালতী
-'মা এখন কেমন আছে খোকা?'


-'জ্বর একটু কমছে এখন,
তুই কখন আসবি,বার বার বলছিলো।
দেখে শুনে আছিস মা...'


ফোন রেখে,জানালার গ্রিল ধরে-
বাহিরে তাকায় মালতী
মন তাঁর পরে আছে
বকুলপুরের ছোট্ট টিনের ঘরে
যেখানে অপেক্ষায় আছে, মা আর খোকা।


মালতীর মা পথ চেয়ে আছে...
সারা রাত গেলো বেলা বড়ছে কিন্তু;-
মালতী এখনো এলো না
ফোনটাও বন্ধ,ছেলেটা কাঁদছে...


পাশের বাড়ির কাদের আলী
ছুঁটতে ছুঁটতে এসে বললো,সর্বনাস হয়েছে
মালতী আর নেই... মালতী আর নেই...
কি হয়েছে আমার মেয়ের, বলো কাদের,
বললো মালতীর মায়ে।


কাঁন্নাসিক্ত কন্ঠে কাদের আলী বললো-


বকুলপুর ট্রেশনে,-
মালতীর লাস পেয়েছে পুলিশ
ধর্ষকরা এখনো ধারা পরেনি।


(সমাপ্ত)
রচনাকালঃ ১২ জানুয়ারি ২০১৯।।