সময়টা এখনকার নয়;
হয়তো বছর বিশে ক কিম্বা তারও আগের।
তখন ইচ্ছে হলেই গা ভাসাতাম কল্প লোকে
পানকৌড়ি বা বুনো হাঁস হয়ে।
হ্যাঁ! তখন তুমি চাইলেই
হতে পারতাম একটি মানব বৃক্ষ।
একটি নদী,একটি জলজ উদ্ভিদ
কিম্বা ডলফিন।
তুমি চাইলেই কাশবন হতে পারতাম।
সাদা বক, ভাটিয়ালি গান, নৌকার পাল
কিম্বা দূরে…… উড়ে যাওয়া শঙ্খচিল।
কোন এক সময় বৃষ্টি হতে চেয়েছিলাম।
ভেজা চুল, ভেজা কাপড়
কদম হাতে গোপন আদর।
তুমি চাইলে একটি বসন্ত হতে পারতাম।
নাহারের রেশমি চুল
খোপায় গোঁজা বুনো ফুল
কিম্বা হতে পারতাম তার ওষ্ঠে লুকানো হাসি,
গালের টোল!
তুমি চাইলে কোন এক কিষানীর ঘাম হতে পারতাম।
গরম ভাতের এক চিমটি লবণ
কিম্বা হতে পারতাম;
গলায় ভাত আটকে যাওয়ার মুহূর্তে এক ঢোক জল।
তুমি চাইলেই;
প্রচণ্ড খরতাপে এক ঝটকা হাওয়া হতে পারতাম।
তুমি চাইলেই;
ফাগুন ভোরের এক মুঠো রোদ্দুর হতে পারতাম।
হতে পারতাম তপ্ত সূর্য, লাল শাড়ি,
ছেড়ে যাওয়া জাহাজ, হুইসেল, মাস্তুল
আরও কত কি!
তুমি চাইলেই একটি মিছিল হতে পারতাম।
একটি পিচ, বুকের তাজা রক্ত
কিম্বা; ভুল ইতিহাস আর মিথ্যে দলিল
পোড়ানো র মত দাবদাহ আগুন হতে পারতাম।
তুমি চাইলেই;
কোন এক সোনালী দিনের সূর্য হতে পারতাম।
একটি সুন্দর সকালের;
মুঠো মুঠো আলো হতে পারতাম।
তুমি চাইলেই একটি প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর ও
একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের ভ্রূণ হতে পারতাম।
তুমি চাইলেই হতে পারতাম
মজুরের হাতুড়ি কিম্বা কোদাল।
একটি দমকল হতে পারতাম নির্ভাবনায়!
তুমি চাইলেই সবুজ ঘাস হতে পারতাম।
একটি শরৎ সকাল
শিশির কণার রুপোলী ঝিলিক,মায়ের আঁচল
কিম্বা;একটি স্বাধীন মানচিত্র।
অথচ;তুমি চাওনি বলে আমি কিছুই হতে পারিনি
বিবস্ত্র মানচিত্রের একমাত্র ধূসর স্বপ্ন ছাড়া।