হে মহান ত্যাগী শহীদ
তোমার আত্মা সদর্পে ঘুরছে স্বর্গের বাতাসে
তোমার হত্যাকারীরা অন্তিম শয়নে নিদ্রা গিয়েছে
হয়তো তোমাদের কবরে তৈরি হবে স্মৃতিসৌধ।
বাঙালি আজ উদ্বাস্তু, বঙ্গ যেন এক গভীর অরণ্য
যেখানে ফাঁদ বিছিয়ে রেখেছে
জ্বরের জ্বলুনি, শ্বাপদের দাঁত
অমঙ্গুলে কুণ্ডলী পাকানো সাপ
যেন ঠেলে দিচ্ছে মৃত্যুর দিকে।
ঠগ শাসকগুলো যেন আরো ধূর্ত আরো হিংস্র
সোনার বাংলায় চলছে মাতালের ধর্ষণ, দুর্নীতি
খোঁয়াড়ে পশুর মত তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে
প্রতিবাদী তরুণ যুব সমাজকে।
অন্যায়ের টমটমগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছে গ্রাম থেকে গ্রাম
নির্বাসনের তীব্র বিলাপ ছড়িয়ে পড়ছে প্রান্ত থেকে প্রান্ত
বিলাপের বেদনার সুরে গাঁথা হচ্ছে প্রার্থনাগুলো
আসন্ন সুন্দর পৃথিবীর আশায় হচ্ছে ঈশ্বরের স্তুতিগান।
আমার মানব হৃদয় চাহে কেবলি
বেঁচে থাকার অধিকার
সুখী জীবনের অংশীদারিত্বের অধিকার।
আগুনের পাশে চোখ রেখে পুড়তে দেখেছি স্বপ্ন
অনুভব করেছি যন্ত্রণাগুলোকে,
নীলকণ্ঠে ঈশ্বরের চারণ কীর্তন করেছি
মাঝে মাঝে গোলাপের প্রাণ রস সংগ্রহের আনন্দে
নেচে উঠতে চেয়েছি উদ্দাম আর্দ্র সন্ধ্যায়।
কিন্তু বেদনার ধ্বনি হয়ে বেজে চলেছে
সেই প্রচন্ড বিরহ গান
অপেক্ষা করেছি চঞ্চলতার চমৎকারিত্বের
জীবন আর পৌরুষের বিজয় ঘন্টার।
কোন শাসকের বাধ্য হয়ে শ্রদ্ধায় নতজানু আর নয়
অচিরেই ঘোষণা হবে চড়া সুর
এই দেশ থাকবে না আর বেশিদিন গভীর অরণ্য হয়ে
বাঙালি মাথা তুলে সোজাদৃষ্টিতে দেখতে শিখবে
বয়ে আনবে আসন্ন সুন্দরের মুক্তি।
তরুণ প্রজন্মই হবে বিরাট নদীর তীরে
ফুলে ফুলে ভরা আশা
তোমাদের অধিকারেই যাবে বিবর্ণ আকাশে
ঐ আলো ছড়ানো সূর্য।
যে সূর্য তরঙ্গমালায় গলিয়ে দেবে বেদনাকে
যার জ্বলন্ত কিরণ চিরকালের জন্য মুছে দেবে
অত্যাচারী প্রভুর হাতে নিহত শহীদের চোখের জলের বন্যাকে।
এই বিশাল বিপুল বাঙালির বুকে
ভালবাসার বঙ্গকে গড়ে তুলবে স্বাধীন সুখী জাতি হিসেবে।