তোমার প্রথম আসায় হাতে ছিল মায়াকভস্কির বিদ্রোহ,  
চোখে—সকালের নরম রোদ্দুর,  
আর কথায়—অনেক অল্প বয়সের আগুন।  

তারপর একদিন বিহারের ধুলো মেখে ফিরে এলে,  
গলা নিচু করে, বাষ্প চাপা দিয়ে বললে  
খুন হওয়া বাবা আর লুট হওয়া ঘরের গল্প—  
তোমার পিছু ছায়ায় তখন বিষাদের গেরুয়া রং।  

আবার এলে, আবারও এলে—  
কথা হলো চিনের লাল নক্ষত্রের,  
ভিয়েতনামের জঙ্গল-জমাট রক্তে,  
কম্বোডিয়ার মাটিতে পা ডোবানো স্বপ্নের,  
আর কিউবার বিদ্রোহী সিগারে জ্বলা চে-এর ডায়েরি—  
তুমি মুখস্থ বলতে পারতে তাঁর সমস্ত যুদ্ধের হিসাব!  

কিন্তু হঠাৎ কী হলো?  
দরজায় তোমার পায়ের শব্দ থামল কেন?  
ফোন করতেই অচেনা কণ্ঠ বলল,  
"তিন দিন ধরে বাড়ি ফেরে নি..."  
এ-রকম তো কখনো হয়নি—  

আজ শুনলাম, তুমি আগুন দিয়েছ নিজেরই বইপোড়া চুলায়,  
ভারতের গো-বলয়ে ডুবে গেছ নতুন নামের মন্ত্রে,  
আমার মুখ এখন তোমার চোখে 'শত্রু'র তকমা।  

আমি কী অপরাধ করেছি?  
তুমি তো লিখেই ফেলেছ নতুন পরিচয়—  
তবু কেন এই প্রশ্ন:  
"জোর করে কি মার্কস পড়ানো যায়?  
ঘোড়াকে পুকুরে টেনে নিয়ে গেলেই  
জল খায় কি?"  

ওগো প্রাতঃসূর্য, আমি জানি—  
একদিন ফিরবে তুমি এই খোলা দরজার পথে,  
ভালোবাসার অক্ষর তখন  
আঁকবে আমাদের মাঝে নতুন কোনো ছন্দ...