'চুলকানি রোগ যেন রাজভোগ
চুলকাতে খুব মজা,
যিনি চুলকান তিনি সুখ পান
স্বাদে যেন খাঁটি গজা।
সকলের পিছু কম-বেশি কিছু
চুলকানি রোগ আছে,
অপরের ভালো দেখে মুখ কালো
লেগে গেলে তার পাছে।
তাই চুলকানি সকলেই জানি
তবু আছে হেরফের,
কেউ ভুল ধরে দেন ঠিক করে
কখনোবা আমাদের।
তাকে ভাবি মোরা বড়ো মুখপোড়া
আসলে তো সেটা নয়,
তাই টানো ঘানি করো চুলকানি
করো নাকো আর ভয়।
তবে শোন দাদা, চুলকানি কাঁদা
কবিদের খুব বেশি,
দেখে চুলকানি, চোখে ঝড়ে পানি,
রাগে ফুলে ওঠে পেশি।
শত তাড়া খেয়ে প্রতিবাদ ধেয়ে
লেগে যায় অবশেষে,
আমি দেই হানা ভুলি সব মানা
চুলকিয়ে চলি হেসে।
কিছু দিন আগে, হৃদয়ের রাগে,
মোর ওঠে চুলকানি,
খুঁত খুঁজে খুঁজে দেয় চোখ বুঁজে,
জ্যোতিষীর মতো বাণী।
কি যে সুখ তাতে পায় প্রতি রাতে
মনে হয় যেন মধু,
চুলকানি টায় হয়ে গেছে ভাই
গুণবতী কুল-বধু।
সমীরণ কাকা, কেনে চারচাকা
চুলকানি ওঠে মোর,
শুনে মাঝ রাতে, কামড়িয়ে দাঁতে
চলে যায় তার দোর।
বলি এ-কি গাড়ি, ছাগলের দাড়ি,
ছাগলের মতো রং!
টাকা দিয়ে কেন, কিনে আনো হেন
ধরেছে কি এতে জং?
হাসি মুখ তার হয়ে যায় ভার
মোর সুখ সীমাহীন,
মনে মনে আমি তপোবনে নামি
নাচি তা তা ধিন ধিন।
মহসিন ভাই, লটারি জেতাই
সে-কি চুলকানি মোর,
চুলকিয়ে সারা, যাবো যেন মারা
অমানিশা হয় ঘোর!
বলি তারে গিয়ে, এই টাকা নিয়ে
জেনে রাখো হবে পাপ!
সুদে ভরা টাকা, হয়ে যাবে বাঁকা
এনে দিবে অভিশাপ!
আরো বহু বান, দিতে থাকে শান
অবিরাম তার কানে ,
সব কথা শুনে দুখি জাল বুনে
নেমে পড়ে শেষে দানে।
দাদা সনাতন তুলে আলোড়ন
হয়েছেন ডাক্তার,
তারে গিয়ে বলি কালে এটা কলি
তোর হলো তবু হার?
তোর জিত হলে রঙ দেবো দোলে
মানসা করেছি এটা,
তবু তুই দাদা বুকে দিলি কাঁদা
করলি এভাবে পেটা?
এখনের দিনে বিসিএস বিনে
আছে না-কি কিছু দাম?
এতো পড়া করে এতো দিন ধরে
এটাই কি তোর কাম?
তার হাসি মুখ করে ধুকপুক
মোর সুখ সেটা দেখে,
চুলকিয়ে ক্ষত হয়েছিল যতো
এক করি সব মেখে!
কবি হুমায়ূন ধরিয়েছে ঘুণ
এসেছিল মোর বাড়ি,
বলে রূপবতী মোর শালী অতি
অমায়িক এক নারী।
মোর চুলকানি দেয় হাতছানি
চুলকাতে হবে তার,
পরদিন রাতে আম নিয়ে হাতে
চলে যায় তার দ্বার।
আম এক গাদি নিয়ে যায় বাঁধি
নিজ বাগানের আম,
বহু আম আছে তাই ভাবি পাছে
নেই তার ততো দাম।
মোর নামি আম দিয়ে বহু দাম
শত লোক নেয় কিনে,
কভু করো কাছে নাহি দেই পাছে
বহু-বহু দাম বিনে।
গিয়ে তার বাড়ি টানি নিজ দাঁড়ি
হায় এ-কি কাজ মোর!
চুলকানি বশে এতো বড়ো ধ্বসে
নামিয়েছি এই ঘোর?
গিয়ে দেখি শালী রূপে গুণে কালী
ভার হয় মোর মন!
মনে-মনে তাই করে হায়-হায়
দিয়ে ওঠে আলোড়ন!
বলি আমি তারে শুধু বারেবারে
শালি খান বেশ খাসা,
কবি বলে দাদা তুমি দেখি হাঁদা
বোঝ না মনের ভাষা?
এতো দামী আম নাহি দিয়ে দাম
খাবো ছিল মনে আশা,
তাই তব কানে অস্থির বানে
বুনেছি শালির বাসা।
হবে এটা জানি হেতু চুলকানি
দুই-জনে এক রোগ,
ভুলে যাও জ্বালা মনে দাও তালা
চুলকানি করো ভোগ।