জন্মদিনে খোকন সোনা গায় লাগিয়ে পাঞ্জাবি
মুচকি হেসে বলছে যে তার পূরণ হবে সব দাবী,
আজকে যাবে বসুন্ধরায় বাবা-মায়ের হাত ধরে
কী জানি তাই ভেবে ভেবে হাসছে কভু ফিক করে।


অনেক রকম খাওয়া দাওয়া হরেক প্রকার আমদানি
মার পরনে পড়তে হবে বলছে খোকা জামদানী,
আধো আধো গলায় খোকা বলছে মাকে ঢং করে
আমায় আগে সাজাও গো মা দিদির সাজাও তার পরে।


মাথায় আমার দিদির মত পরাও ফিতা টকটকে
দিদির মত কাজল দেবো দেখবে চেয়ে সব লোকে,
সব শুনে তার বাবা তখন বলছে খোকা শোন নারে
খোঁপার ফিতা চোখের কাজল মেয়ের জিনিস এইটারে।


বলছে খোকা মানবো নাকো যতই বলো এইটা আজ
কমটি দিয়ে ঠকাও আমায় পৃথক জানি নাই তো সাজ,
অনেক কিছু পাবার আশায় যখন খোকা রাগ থামায়
ততক্ষণে বাবার দেহের মাথার ঘামে পা ভেজায়।


ঘরের বাহির হতেই খোকা দেখলো বসা ফকির কে
একটি টাকার জন্য ফকির দুষছে ভীষণ নসিবকে,
হেলে দুলে যখন খোকা উঠল গিয়ে রিক্সাতে
দেখলো খোকা রিক্সা চালক রিক্সা চালায় এক হাতে।


একটি হাতে চালায় রিক্সা অন্য হাতটি পঙ্গু তার
সুখের সকল স্বপ্নগুলো হয়েছে তার চুরমার,
কষ্টে ঘামা সারা শরীর ভীষণ যে তার যন্ত্রণা
একে একে সকল খবর নিয়ে দিলো সান্ত্বনা।


শুধায় খোকা বাবার কাছে ফকির কেন ভিক্ষা চায়?
সারা শরীর সুস্থ যে তার গায়ে দেহে হাতে পায়,
রিক্সা থেকে নেমে খোকা খেতে গিয়ে ঝালমুড়ি
দশ বছরের একটি ছেলে দেখলো বানায় বেল-পুরি।


এইটা দেখে বাবার কাছে বলছে খোকা হাত ধরে
দোকানদারি করছে কেন পড়ালেখা সব ছেড়ে?
বল্ল বাবা পড়ালেখা কেমন করে করবেও?
বেল-পুরি না বেচলে পরে জুটবে না ভাত একদিনও।


বসুন্ধরা গিয়ে খোকা খাবার খেতে বসলো যেই
একটি ছেলে খোকার খাবার ছো মেরেছে এমনিতেই,
ধরে সবাই সেই ছেলেকে মারলো ভীষণ পিঠের পর
কিল ঘুষিতে ফাটালো নাক কেউবা দিলো কষে চড়।


খোকার চোখে জলের ধারা করছে শুধু টলমল
কেন ওরা মারলো এমন ঐ ছেলেকে অবিরল?
খাবার জিনিস খেয়েছেও বেশ করেছে,চমৎকার
এমন করে মেরে ওরা করলো কেন অবিচার?


আমার মত সেউ তো খেলো,খেলো আরো কত জন
মার কেন যে একাই খেলো শুধু শুধু অকারণ?
হেসে দিয়ে বল্ল বাবা মুছে ফেলো কোলাহল
ধরার নিয়ম বড়ই কঠিন ভাবলে ভাঙে মনবল।


বল্ল খোকা ভীষণ শোকে হাসছো তুমি কেন আজ?
এমন হবে আমার সাথে ভাবতে পারো তেমন কাজ?