পঁচিশ বছর ধরে চিলেকোঠা ঘরে
আজও মোর মনখানি রইলো পড়ে,
যবে আষাঢ়ের সন্ধ্যায় নেমেছিল ঢল
পানি ঝরে করেছিল সেথা কল কল,
এক কোণে মায়াবতী ছিল দাঁড়িয়ে
কোমর অবধি তার কেশ ছাড়িয়ে,
কেশ তার দুলেছিল মৃদু মৃদু বাতাসে
ঘন মেঘ গুড় গুড় ডেকেছিল আকাশে,
চমকিত ভীত মনে হয়ে নিরুপায়
চিৎকার দিয়ে বুকে নিয়েছিল ঠাঁই,
নির্বাক অপলক ভেজা তার ঘ্রাণে
প্রেম দোলা লেগেছিল এসে মোর প্রাণে।


চিলেকোঠায় বাদলের বৃষ্টি শেষে
তার স্মৃতি বয়ে নিয়ে ফিরেছিনু দেশে
দিন যত যায় তত তার স্মৃতি ভাসে
মায়াবতী এসে ঘুমে মিঠে মধু হাসে,
উজানে ভাটির টানে দুই যুগ পর
সেথা আর দেখি নাই চিলেকোঠা ঘর,
উঁচু হয়ে পড়ে আছে শুধু ভিটে মাটি,
তার প'র পড়ে আছে পিতলের বাটি,
এতটুকু স্মৃতি সেথা আছে শুধু পড়ে?
আরো বহু স্মৃতি আছে চিলেকোঠা ঘরে।


পিতলের বাটিতে মুড়ি মাখা গুড়
মায়াবতী রমণীর মন কাড়া সুর,
সবকিছু পড়ে আছে চিলেকোঠা ঘরে
নেই শুধু মায়াবতী ধরনীর পরে,
যার স্মৃতি বয়ে চলি পঁচিশ বছর
তার তরে ফিরে আসি চিলেকোঠা ঘর,
দাঁড়কাক শকুনিরা যায় দল বেঁধে
সাদা কালো মেঘ আর পাহাড় ভেদে,
আষাঢ়ের ঘন মেঘ ঝরে রোজ বর্ষণে
মায়াবতীর চিলেকোঠা পরে এই মনে।


পঁচিশ বছর ধরে চিলেকোঠা ঘরে
আজও মোর মন খানি রইলো পড়ে,
মেঘ ডাকা বিজলি বুক করে খালি
যেই বুকে উঠেছিল চাঁদ এক ফালি,
ঘন মেঘ কালো মেঘ আষাঢ় গগন
চিলেকোঠা জুড়ে ছিল মধুর লগন,
আষাঢ়ের ঘন কালো ঝরে পড়া জল
মায়াবতীর আখি ছিল ভীরু ঝলমল,
আজও সেই স্মৃতি ভাসে মনের পাড়ায়
যেথা দেখি চিলেকোঠা থমকে দাঁড়াই।