আমাদের একটি গ্রাম ছিলো !
গ্রামের যে পড়শী গুলো
সবাই ছিলো সবার আপন জন;
দুঃখ-সুখে একই সাথে করত আলিঙ্গন।
ফুল, পাখি আর লতা-পাতা
ওরাও যেন সাজতো মিতা,
শ্যামল-সবুজ গাছে গাছে
নানান রঙ্গের ফুল ফুটেছে,
ফিঙ্গে নাচে ঝিঙ্গের ডালে,
পাতায় পাতায় পবন দোলে,
উদার মনে ডাকতো মায়ার হাতছানি
সোনা রোদে হাসত যে তাই দিনমনি।


সন্ধ্যা যখন আসতো আঁধার ঘনে-
চাঁদ-তারারা জাগতো আকাশ কোণে;
মাছরাঙ্গা, বক, বাবুই-টিয়া,
চিল, শালিক-হলুদিয়া,
ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ত আকাশ তলে
ভাবত সবাই, ওরাও যেন এ গাঁয়েরই ছেলে।


সেই গাঁয়ের এক বাঁশের ঝাঁড়ে
কাক-কোকিলে বসত গড়ে
শান্ত নীড়ের স্বপ্ন ভরা মনে
আগামীর এক নতুন আয়োজনে
শীত বসন্তে ফুটিয়ে তাদের ছাঁ,
বেজায় আনন্দে করতো যে কা কা।


সেখান থেকে নয়তো অধেক কিলো
এই দূরে এক নদী ছিলো,
নদীর বাঁকে ছিলো কাশের বন
সাদা ফুলে যার হারিয়ে যেত মন
ঢেউ তুলিত সজল হাওয়ায়
কোমল পরশ কোমল ছোয়ায়
পাপড়িগুলো উড়াল দিয়ে স্বপ্ন বরনে
হারিয়ে যেত নীল’য় গগনে।


তাহার পাশে সবুজ মায়ার মাঠে
সবার আগে কৃষক যেতো ছুটে
তারই পাশে ছিল বালির চর
সেথায় মোরা পাতিয়ে খেলা ঘর
মনের সুখে খেলেছি পুতুল খেলা
দিনের শেষে নিবিড় সন্ধ্যা বেলা
মাঠের পরে মাঠ সাজায়ে কত-
ধুম করেযে পুতুল বিয়ে হত !


আজ যে সেথায় নেই সে বালির চর
কাক-কোকিলও হয়েছে যেন পর
গাঁয়ের বাঁকে বাঁশ ঝাড়ও নেই যেন
নেই কো নদী, নেই সে কাশের বন
যুগের তলে সব হারিয়ে গেল
গ্রামটা কে তাই লাগছে এলোমেলো।