দিবসের তাপিত রোদে, বরষার বাদলা রাতে,
                তরী খানি বেঁধে কর্ণধার;
ঘাটের জীবৎ ঘাসে,       পথ চেয়ে আছে বসে,
               যাত্রী করিতে পারাপার।


সহসা ঈষাণ কোণে, আসিছে মেঘ ঘনে,
              বজ্র ধ্বনিতে করি চিৎকার;
তাই দেখে হাক ছারে, তরা করে আয়রে,
                কে কে যাবি তোরা ঐ পার।


কাশ বন ফারি, আসে পথচারী
              নদীর কুল খানি ধরে;
তারে নিয়ে নায়, পাল তুলি তায়
              ভাসায় তরী যেতে ওপারে।


পালে পড়ে টান, ছোটে জলযান,
             উর্মীর শীর দলি দলি;
তরী তোলে তাল,        মাঝি ধরে হাল,
              ভাটিয়ালী সুর তুলি।


অথই নদী, কানায় কানায় ভরা বহমান শানিত ধারা
            যামিনী সেজে আছে উত্তাল;
ঘন মেঘ আকাশে কখন যে তুফান আসে
           উর্মীরে করে আরো উত্তাল


সন্ধ্যা গড়িয়ে শেষে, আধাঁর নিশিতের দেশে
           দুচোখে যায়না দেখা কোন কুল;
মনে মনে ভাবি বসে, আঁধার ঝর-বাতাসে,
                  পথ বুঝি হয়েগেছে ভুল।


শত ভাবনার মনে,          চাহিয়া সম্মুখ পানে,
     খুঁজিতে খুঁজিতে তীর দেখি অবশেষে;
দূর বহু-দুরে, মিটি মিটি করে,
       প্রদিপের আলো ডোবে আর ভাসে।


আরও ক্ষণ পরে,        অদূর পারের তীরে,
            জোনাকির মত জ্বলে জ্বল জ্বল;
ধ্বনিত ধ্বনিত করি, ঢেউয়েতে ঢেউয়েতে গরি,
             ভেসে আসে কার কোলা হল।


বুঝিনু তখনে, উর্মী-ঝর-বর্ষণে,
            মানেনিতো মাঝি মানা;
ঠিক ছুটে ছুটে, পাড়ের ঘাটে,
              ভিরাইছে তরী খানা।