গগনে ঘন ধরা,
ভরা বরষায়;
ঝরিছে বাদল ধরা
অঝর ধারায়।


ভুবন করিয়া তল
নদীতে নামিছে ঢল,
দু’কুল টল-মল
খারা-
দুপুর বেলা।
নবধরা ঢলে
নাইতে নামার ছলে
এপার-ওপার জলে
শিশু-
করিছে খেলা।


তপন পরেছে হেলে
কোথা থেকে আসিয়া জেলে
জলেতে জাল ফেলে
বন্ধ-
করিয়া নালা।
সকলে পাছা-পাছি
কোমরে বাঁধিয়া কাঁচি
কুলেতে টানিছে যাচি
        জাল-
তুলিতে বেলা ।

ওপারে দেখিল কিষাণ
নদীতে এসেছে বান,
ক্ষেতে আছে পাকা ধান
সন্ধাও-
আসে ঘনে ;
ভয়েই কাঁপে মন
ডুবিয়া যায় যে কখন
ধান কাটা প্রয়োজন
মহা-
ভাবনায় কিষাণে।


রাখালীয়া সুর তুলে
নামিয়া হাটু জলে
একাই কাটিয়া চলে
ধান-
আপন মনে;
ধান কাটা শেষে
ভাবে বসে বসে
লইবে সে কিসে
বাড়ী-
সন্ধ্যার এ ক্ষণে।

ঈষাণ গগন জুরে
আলোর ফুয়ারা ছুরে
বজ্র উঠিছে ডুকরে
রাতিও-
হতেছে নিশার;
সহযা দেখে চেয়ে
চরদিক ছেয়ে ছেয়ে
উড়িয়া আসিছে ধেয়ে
মেঘ-
ঘনায়ে আঁধার।


তখনো ঘাটে ফির
যাত্রীর আছে ভির
নেয়া ভার তরণীর
নদীতে-
পড়েছে খর ধার;
সকলে যাবে বাড়ী
গিয়াছে নাও ভরি
তবুও পিড়া-পিড়ি
করিছে-
নায়েতে চড়ার।


যেই না ভাসাল খেওয়া
বহিল তুফানী হাওয়া
ঢলিয়া পরিল দেওয়া
ঝর-ঝর
বাদল ধারায়;
হলো নাকো বাড়ী যাওয়া
ঘাটেই ডুবিল খেওয়া
যাত্রীরা হল নাওয়া
নিশিতে
হয়ে যাওয়া্ আষাড়ের বরষায়।