প্রিয় বাবা
কেমন আছো?
অনেকদিন তোমায় দেখি না।
তোমার ফোনে এখনো রোজ কল করি।
ওপাশ থেকে কেউ এখন বলে না ‍‌‌''বাবা কেমন আছো? শরীলটা ভালোতো।
ঠিকমতো খাবার খেও। কারও সাথে বিবাধ করো না। মিলেমিশে থেকো। ছুটি পেলে বাড়িতে এসো।
তুমি অভিমান করেছো কিনা? তাও জানি না। সেদিন শেষ দেখাটাও করলে না। আমি কি এতই দুর্ভাগা? তোমাকে জড়িয়ে ধরে একটু নিঃশ্বাস নিতে চেয়েছি; প্রশান্তির নিঃশ্বাস। তাও কপালে জুটলো না। এ কোন অদৃষ্ট?
জানো বাবা? আমি তোমার অবাধ্য হতে চাইনি। কিন্তু নিয়তি, সে কখনো তোমার কাছে ভিড়তে দেয়নি।
পত্র লেখার মাঝে একটা কথা মনে পড়ে গেল। তোমার মনে আছে বাবা? সেই ছোট্টবেলা আমাদের গোসল করাতে নিয়ে যেতে। নিজের মতো গোসল করিয়ে বলতে ''শরীলের এ কী অবস্থা; কিছু খাওনা নাকি? এমন কেন শরীল? চলবে কী করে'' তারপর যখন খেতে যেতাম প্রিয় খাবারগুলো কখনো একা খাওনি। বুঝতেছি না এমন কথাগুলো আজকাল কেন যেন খুব বেশি মনে পড়ছে। দোয়া করো বাবা!
আজ আমি বড় হয়েছি; চলতে শিখেছি। কিন্তু তোমার জন্য কিছুই করতে পারলাম না। পারলে ক্ষমা করে দিও বাবা।
বাবারা কখনো অভিমান করে না সে আমি জানি; তবু বলছি কেন জানো? নিজেকে হালকা করতে। তোমার সাথে দেখা না হওয়াটা যে কতো কষ্টের সে আমি ছাড়া আর কে জানে? তুমি নেই বলেই হয়তো আমিও আগের মতো নেই। মাঝে মধ্যে তো নিজেকে এখন অসহায় মনে হয়। মনে হয় ধূসর মরুভূমির মাঝে আমি একাকি একটি তৃণলতা।
তুমি সুখে থেকো ওপারে।


ইতি
তোমারই হতভাগ্য ছেলে