একদা এক রাজার মনে জাগলো বড় সাধ!
নিজের হাতে ছুঁয়ে দেখেন আকাশের ঐ চাঁদ!
যেমনি ভাবা তেমনি হাকেন-‘মন্ত্রীমশাই কই!
চন্দ্র ছুঁয়ে দেখবো আমি জোগার করুন মই!’
মন্ত্রী বলেন- ‘মাননীয়, চন্দ্র অনেক দূরে!
এতোবড় মই পাবো কই রাজ্যটাতে ঘুরে?’
‘রাজ্যে যদি নাইবা থাকে ছুতোর ডাকুন তবে,
খুব জরুরী আসুক সবাই মই বানাতে হবে!’


আদেশ পেয়ে শাস্ত্রী-সিপাই এদিক ওদিক ছোটে,
গাঁও-গেরামে খবর যেতে দু’দিন লাগে মোটে!
ছুতোর এলো ষোলকুড়ি, ষাটকুড়ি হেলপার,
বসে গেলেন__সবাই দিতে যন্ত্রপাতির ধার!
অন্যদিকে___রাজ্যে যতো বৃক্ষ ছোট-বড়,
কেঁটে এনে কর্মীরা সব করতে থাকে জড়ো।
চারিদিকে খুশির জোয়ার__আনন্দ হৈ-চৈ;
বিদেশ থেকে কেউবা আনেন ক্যাটালগের বই!


রাজ-পরিষদ ব্যস্ত হলে নকশা খোঁজার কাজে,
উত্তেজনা বাড়লো আরো রাজ্যে সবার মাঝে।
উত্তেজিত রাজামশাই, উজির, নাজির সবে,
চন্দ্রছোঁয়া মই বানালে কাজটা মহৎ হবে!
দিনে দিনে সপ্তা’ কাটে__সপ্তা গিয়ে মাস;
পরিষদে নকশা মই-এর_হয়না তবু পাশ!
তবু কারোর উৎসাহতে পরেনা যে__টান,
রাজ্যজুড়ে সবার মুখেই চন্দ্রছোঁয়ার গান!


চুহাত্তরের এপ্রিল মাস, সেদিন তারিখ নয়
হঠাৎ করেই ঝড়টা এলো সে কি রাজ্যময়!
ঝড়ের সাথে পাল্লাদিয়ে এলো জলোচ্ছ্বাস,
রইলোনা আর রাজ্যটাতে কোন লোকের বাস!
দৈবগুণে___একাই বেঁচে গেলেন শুধু রাজা
বুঝতে বাকি রইলোনা তাঁর কিসের হলো সাজা!
ভুলটা ছিল__আকাশ-কুসুম চন্দ্রছোঁয়ার মন;
বাঁচতে হলে করোনা ভাই উজার সবুজ বন!


<><><><><><><><><><>
রচনা : ২১ নভেম্বর ২০০৭, লালমনিরহাট।