পাশের বাড়ির মেয়েটা গতকাল রাতে বলি হলো;
পৌরুষ্য কামনার লোলুপ কুৎসিত চাহিদায়!
সকালবেলা চারকোণা বাক্সে খবর বেরুলো;
গতকাল রাতে তিন যুবকের হাতে এক তরুণী ধর্ষিত!
চারদিন পত্রিকার পাতায়, টিভির পর্দায় খুব করে চর্চা হলো;
ধর্ষক, ধর্ষিতা, ধর্ষণের ঘটনা!
পঞ্চমদিনের ব্রেকিং নিউজ;
প্রধানমন্ত্রীর আজ ভারত সফরে যাচ্ছেন।
সামরিক চুক্তি অনুষ্ঠিত হবে,
আর আমরা জুহুগের দলেরা অংক কষতে বসে গেলাম!
চুক্তির স্মারক সাক্ষরে লাভ হবে না লোকসান?
ষষ্ঠদিনে সব চুপচাপ!
বেমুলাম ভুলে গেলাম ধর্ষিতার চোখের নোনা জল!
তারপর আমার মা জাতি সম্ভ্রমহারা ধর্ষিতা!
আমি আমরা অমানুষের দলেরা নিরব দর্শক!
আর হায়েনার দলেরা বীরপ্রতাপী ধর্ষক!


আজকাল দেখি আমার বোনটা আমার দিকে কেমন ঘৃণার চোখে তাকায়!
তাকাবে না কেন?
প্রতিদিন শকুনের দলে তার জাতির সতীত্ব হচ্ছে বিসর্জন!
আর আমি?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দু'কলম লিখে আমার জাতিকে করছি উদ্ধার!
পর্দা করে না!
বেগানা নারী!
ধর্ষণ হবে না কেন?
অব্যশই হবে!
ধর্ষকের গলায় কাধ মিলিয়ে করে যাচ্ছি তার শুদ্ধতার বিচার!
অথচ আমার বিবেকে নাড়া দেয় না;
তবে কেন হচ্ছে পাঁচ বছরের বাচ্চা মেয়েটার বলৎকার?
কেন পর্দা করা মেয়েটাও হচ্ছে যৌন লাঞ্ছনার শিকার?
জানি আবার কাল সকালে খবর বেরুবে;
রাতের আঁধারে রাজধানীতে তিন তরুণীর গণধর্ষণ!
তারপর এভাবেই চলতে থাকবে,
হবে আমার মা আমার বোন সম্ভ্রমহারা ধর্ষিতা!
আমি আমরা অমানুষের দলেরা হবো নিরব দর্শক!
আর হায়েনার দলেরা বীরপ্রতাপী ধর্ষক!


রাতের নিশুতিতে অজপাড়া গায়ের বালিকা;
প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে হারায় তার মূলধন।
লোকে জানাজানি হবে!
মানসম্মান তখন কোথায় যাবে?
তাই বালিকার বাপ ভাইয়ের মৌন চিৎকার;
একদম চুপ!
কাউকে বলবি না!
জানাজানি হলে তরই সর্বনাশ হবে!
বালিকা চুপ হয়ে যায়।
আর আড়ালে ধর্ষক অট্টহাসে!
কোন এক শুভক্ষণে বালিকা বিয়ে হয়,
তবুও রয়ে যায় কিছু কথা,
বালিকার শরীর বলে;
কোন একদিন এ শরীরে এক অমানুষ করেছিল নির্যাতন!
হয়তো বালিকা তাই নিত্য বলে সব পুরুষ জাতটাই এক,
সব অমানুষ।


আর আমারও নিজেকে দূষিয়ে বলতে ইচ্ছে হয়;
মুখের বুলিতে, গানের কলিতে, কবিতার ছন্দে ক'দিন ঠিক হয় বিচার আদায়ের আন্দোলন।
সপ্তাহ না ঘুরতেই আবার সব চুপ!
বিচার মুখ থুবড়ে অসভ্যদের পায়ে পদদলিত হয়!
আর শকুনের দলেরা?
ওরা আজও বীরপ্রতাপী ধর্ষক!
ওদিকে আজও মেয়ে জাতিতে তকমা;
ওরা ধর্ষিতা!
আর আমি আমরা?
পেন্টের পকেটে হাত গুচিয়ে নিরব দর্শক!