চুরুলিয়া গ্রাম, জেলা বর্ধমান,
জৈষ্ঠ্য ১১, ১৩০৬ সন,
কাজী ফকির আহমেদের ঘরে,
মাতা জাহেদা খাতুনের উদরে
অতি শুভক্ষণ, জন্মিলেন এক সন্তান,
বাংলার ইতিহাসে চির অম্লান
নাম তাঁর কাজী নজরুল ইসলাম।


দুঃখ ভরা জীবণ তাঁর,
পায় নি বাবার আদর,
আট বছর বয়স যখন,
বাবা মারা গেলেন তখন।


লেখাপড়ায় দিয়ে ইতি,
নজরুল করেন ইামামতি।
কখনও বা দেন আজান,
কখনও বা ওস্তাদ হন
কখনও বা লেটো দলে গান গান।।


আবার রুটির দোকানের কর্মচারি
দিনান্তে কাজ সারি
করেন পুথিঁ পাঠ সুর করি।।


কাজী রফি আহমেদ পেলেন পরিচয়,
এ ছেলে সাধারণ কেউ নয়,
পরিচর্যা করতে এ প্রতিভার,
নিয়ে এলেন আপন ঘর।
রেখে নিজ আলয়,
ভর্তি করেন পাঠশালায়,
নিখিল বিশ্ব পাঠ্য যার,
ভাল কি লাগে? বিদ্যালয়ের গণ্ডি তার।
কাটায়ে কিছুকাল,
ছাড়লেন ত্রিশাল।
রাণীগঞ্জ এলেন,
সিয়ারসোল রাজ হাই স্কুলে ভর্তি হলেন।
দশম শ্রেণির ছাত্র যখন,
যুদ্ধের দামামা বাজলো তখন,
বিদ্রোহ যার রক্তে লেখা
সে কি ঘরের কোণে রইবে একা?
নাম লেখালেন সৈন্য দলে,
যুদ্ধ ক্ষেত্রে গেলেন চলে।
বাজে রণ দামামা অস্ত্রের ঝনঝনানী,
নজরুল এক অকুতোভয় সেনানী।


যুদ্ধের মাঝে সাহিত্য চর্চা
নজরুলই পারেন তা।
লেখেন গল্প কবিতা,
ছাপা হয় পত্রিকায়,
ধন্য ধন্য পড়ে যায়।


যুদ্ধ শেষে,
বীরের বেশে
এলেন ফিরে
বাংলাদেশে,
থিতু হলেন কোলকাতায়,
মনোনিবেশ করেন সাহিত্য সেবায়।
লেখেন তিনি দেশের কথা, দশের কথা
ইংরেজদের শাসন, শোষনের কথা,
ভারতবাসী লুফে নেয় তা।


ভারত পরাধীন,
করতে হবে স্বাধীন,
এমনি বিপ্লবী কথা,
নব জাগারণ বার্তা
ইংরেজ মানে নি তা,
বাজেয়াপ্ত হয় তাঁর কবিতা,
হয় অভিযোগ,রাজদ্রোহিতা।


জেল জুলুম অত্যাচার,সকল করেছেন সহ্য,
নিয়ে অসীম ধৈয্য।
লিখেছেন অসংখ্য গান, গল্প, কবিতা,
উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ সবটা,
বাদ পড়ে নি সাহিত্যের কোন শাখা।


এমনই ক্ষণজন্মা প্রতিভার হয় নি পূর্ণ স্ফূরণ,
মারত্মক ব্যধির কারণ।
১৩ই ভাদ্র, ১৩৮৩ সন,
ঘটে তার মহা প্রয়াণ,
কেন্দ্রিয় মসজিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সায়িত আছেন চির নিদ্রায়,
জান্নাতবাসী করুন তাকেঁ স্রষ্টায়।।