কবি এসেছিলেন,
হেমন্তের হিম কোয়াশায় ঝিরঝির স্নিগ্ধ হাওয়ায় -
অপরিস্ফুট প্রভাতে আবিল পথে হেঁটে-হেঁটে;
শালি ধানের আমন খেতে ডাঙায়-ডাঙায়
নবান্নের উৎসবে মেতে উঠা পরিযায়ী পাখিদের সাথে
কবিতার খাতা হাতে নিয়ে।
কবি,বিস্ময় দৃষ্টিতে দর্শন করলেন,- বাংলার সৌকুমার্য রূপ
মেখলা তটিনীর কুলে পানকৌড়ির লুকোচুরি;
মাছ রাঙার রঙিন ঠোঁটে-ঠোঁটে পুঁটির খুনসুটি,
জলামগ্ন হাওড়ের বুকে দাঁড়িয়ে সাদা-বকের গগনচুম্বি উঁকি
বিলের-ঝিলের জলে লাল-নীল পদ্মের প্রসন্নতা,
স্থলে দলে-দলে সুরভী মাখা পুষ্পের মিষ্টি হাসি।


অথচ রোদের রক্তিম রশ্মি মৃত্তিকা ছোঁয়ার পর থেকেই
কবিকে আর দেখা যায়নি, কবি অকস্মাৎ নিখোঁজ!
শুধু পড়ে আছে কবিতা-খাতার প্রত্যেকটি রক্তাক্ত পৃষ্টা
ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বাংলার হাটে-ঘাটে-প্রান্তরে;
এতে সুশ্রী সুবর্ণা এই বাংলার কারুকার্যময় রূপের বর্ণনা নয়,-
কবি এঁকেছেন,- একটি রাষ্ট্রের ভয়ংকর ভীমদর্শন চিত্র!
মানচিত্রের চতুর্পাশে দুর্ভিক্ষের অস্পষ্ট ছাপ,
উল্লেখিত কিছু স্থানে ধ্বংস-বিধ্বস্ততার ‘আইকন’;
নাগরিক জীবনের বিমূর্ত ছবি আর দুঃখ ধূসর কোটি-কোটি মুখ!


তারিখঃ ২৭-১০-২০২২ খ্রিস্টাব্দ
জালালাবাদ,সিলেট।


উৎসর্গঃ রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ।


বিঃদ্রঃ ১১-১১-২২ খ্রিস্টাব্দে দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকায় প্রকাশিত।