একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন ছায়া এসে আমাকে ঘিরে ধরেছে ;
ঘন কুয়াশার আবিল পথে হাঁটেতে হাঁটতে
আজ আমি দিশাহীন অবসন্ন।
বছরের পর বছর প্রাকৃতিক দূর্যোগ অনাবৃষ্টি-খরা, শিলাবৃষ্টি
অকাল বন্যার অতলে ;ক'বছর ধরে এক মুঠো শস্যও ঘরে  উঠেনি -
শূন্য গোলায় ইদুরদের দাঁত চিবানো আওয়াজটা অভুক্ত ক্ষোভের চিৎকার !
চুড়ুইয়ের সুড়ুৎ সুড়ুৎ ধ্বনি সারা বাড়িতে দুর্ভিক্ষের স্লোগান দিচ্ছে।


এদিকে ছোট'র সেশন-ফি, মেসের খরচ-
মেজুর ইউরোপে 'সেটেল্ড-মানির' তাগিদ,বাবার দৈনিক হার্টের ঔষধ;
ভাঙাচুরা ফোনটা বাজলেই বুকটা ধকধকিয়ে কেঁপে উঠে,
নিশ্চয়ই অণুর শশুর বাড়ীর কেউ হবেন,-
বোনটির দোষপাঠ করতে অথবা কৌশলে কোন কিছুর দাবী জানাতে!
চারদিক থেকে ক্ষুব্ধ মেঘের ফোঁটার মতো দেনার সমন!
বাজরে মুদির দোকানের লম্বা বাকিজায়,কৃষি ঋণের বকেয়া,
তহশীল অফিস থেকে  খাজনার লাল-চিঠি, অথচ -
জমি বেচতে বেচতে চৌকাট অবধি পৌঁছে গেছি
মাথা গোঁজার ভিটা টুকু ছাড়া উদ্ধৃত কিছু নাই।
হাওরে এক ছটাক জমি নাই, হালের বলদ জোড়াটাও গত সপ্তাহে বেচে দিলাম ,
শূন্য গোয়ালের ভিতর শুধু খা-খা হাহাকার!


অন্যদিকে আমার বিশ্বস্ত প্রেমিকা মহানন্দার অপেক্ষিত ক্লান্ত চোখে -
না'বলা সঞ্চিত কথার স্তপ,একগাদা অভিযোগ সংবৃত।


আজ যদি বাবার টাকা থাকতো কবে ছোটোর চাকরি হয়ে যেতো!
আরো বছর খানেক আগে মেজু ইউরোপে সেটেল্ড হতো,
অণুটা শশুর বাড়ীতে কিছু স্বস্তি পেতে! সংসারটা একটু গুছাতে পারতো,-
আমাকে ভার্সিটির বারান্দা থেকে এসে হালের বলদের পিছু পিছু হাটতে হতোনা !
আজ জীবনটা শুষ্কপাতার মতো রসাশূন্য শুকনো হতোনে!
শুধু বাবার টাকা নেই বলে আজ জীবনটা দূর্বিষহ, পথটা দূর্গম-কণ্টকাকীর্ণ !!


তাং-০৫-০৯-২০২২ ইং


উৎসর্গঃ রবিউল কোরেশী কাউসার।