কবি,-এতো অভিমান কেন?
কিসে এতো মনস্তাপ!
কে দিয়েছে মর্মে আঘাত?
কে এঁকেছে এই বিষন্নের ছাপ?
কবি-বন্ধু?- সে তো তোমারই স্বজাতি!
তবে কি ঐ নাদান জনতা?
কবি, এরা তো অন্ধ-অজ্ঞ -অবোধ
তবু-ও তো তোমারই আপন ভ্রাতা!
এরা যে নিত্য প্রতারিত!
আকুল বিশ্বাসে হৃদয়ে করে ধারণ-
বড়- বড় জনসমাবেশে শুনে,
ভণ্ড নেতার মিথ্যা ভাষণ।
এরা ভুক্তভোগী!
প্রতি দপ্তরে দৌড়ে-দৌড়ে হয়রাণ,
লাল ফিতার ভিতরে দেখেছে
দেবতার স্থলে শয়তান।
বাংলা মায়ের বুকের একবৃন্ত  চুষে খায়
পরজন্মা পালিত শিশু,
আর বৃন্ত খামচে দখল নিয়েছে
স্বগর্ভা কুলাংগার কুসন্তান-দস্যু।
এই আম-জনতা মাতৃগর্ভ থেকেই
চির বঞ্চিত এবং শোষিত -
দুঃখীনি বাংলার অসহায় সন্তান
এরা যে পদে-পদে লাঞ্চিত।
এরা বড্ড অভাগা এক জাতি
আঘাতে-আঘাতে মর্মাহত! হেতু -
সব দেখে শুনে বুঝে এই বীর-জাতি
সেজেছে আজ ভীষণ ভীতু!
এখনো শুকায়নি অতীতের রসনার ঘা ;
দই দেখে ভাবে চুন!
তোমার হাতের রাঙানো আল্পনায় দেখে
লালে লাল নতুন খুন।
কবি, এদের কাছে আজ
তোমার সত্য সুন্দর বাণীচয় মিথ্যা অহেতুক!
মিথ্যা ভাষণদাতা ভণ্ড নেতার মতো ভাবে,
কবিরা ও বুঝি দারুণ মিথ্যুক!
তাই বলে কি কবি, -তুমি লিখবেনা
সত্য-শ্বাশত কবিতা?
গাইবেনা মানবতার গান,দেখাবেনা আর মুক্তির দিশা,
বলবেনা প্রেমের কথা!
জানো কবি,অশুভ চক্রের এক অদৃশ্য বেষ্টনে
গোটা জাতি বন্দি-অবরোধ;
এদের প্রতি কি তব হৃদয়ে জাগেনা
সামান্যটুকু মমত্ববোধ!
বলো, কবি বলো? তবে কেন এই অভিমান?
এবার ভাঙো তোমার অভিমান!
ভাঙো শব্দে শব্দে এই অদৃশ্য দেয়াল,
বাক্যে বাক্যে গেয়ে বিপ্লবী গান।


উৎসর্গঃ কবি মার্শাল ইফতেখার আহমেদ।