আসমানী শাড়ী
############


প্রভু যে ফুল ফোটালে তুমি রাতে
রং পেলো শ্বেত শুভ্রসাদা,
সূর্যের তাপে তিক্ত তীক্ষ্ণ হয়ে
রং পেলো রংবে রংয়ের রাঙা ।
তোমার অপার স্নেহের ভবপারের
মহিমা বোঝা ভার,
প্রভু আমি অন্ধকারের যাত্রী
আমায় আলো দেখতে দাও।।
ধানক্ষেত সারি, বাতায়নে ভরি,
সোনালী সোনার নপুর বাজিল ছন ছন।
কৃষকের মান বুকভরা সান গোলাঘর ভরি
করিল আওয়াজ ঝম ঝম।।
নবান্নের ঘ্রান ,ঘরে ঘরে অনিল প্রাণ,
ফিরে এলো জীবনের সুর।
দক্ষিনা বাতাসে রাত্রি প্রহর শেষে  
ভেসে ভেসে যায় দুর  বহুদূর।।
লহরে লহরে গঞ্জে গঞ্জে
গুঞ্জে উঠিছে লহরী ভোরাইয়ের গান,
কোকিল কোকিলা ফিঙে লেজ ঝোলা
চেনা অচেনা পাখির কুহু কলতান ।।
কাকভরে, নিকানো উঠন জুড়ে
শ্যামলীর হাতে রেকাব
ভোরে ধুপধুনো শঙ্খ যোগে দিনের আহ্বান ।


ধরণী কাকা শীত সিক্ত অর্ধ জল মগ্ন অবগাহন
সূর্য্যপ্রানাম সেরে নিত্যাকর্মা পূজার আয়োজন ।।
আশমানী শাড়ী কলাপাতা হাঁড়ি চুড়ুইভাতি
বসে সারি সারি,
শ্যামলীর হাতে ,ডাল ভাত
সাথে ইলিশের পাতুরি ,
মনে পড়ে আরো কত কি তরকারি ।।


মাস কয়েক ঘুরে সময় স্রোতে ফিরে
মন হরণ করিল রমনী ।
ছিপছিপে শ্যামলা, কাজল নয়না
সর্বগুনের মরমী শ্যামলী।।
চেনা মুখ অচেনা কুয়াশা ঘন ফেনা
বসন্তেও কালবৈশাখী  ধেয়ে এলো
পরতে পরতে আঁকা জীবনের পাতা
স্বপ্ন মাখা নয়ন হয়ে গেল এলোমেলো।।
আগমনী সুরে মহালয়ার ভোরে
ভোরাইয়ের গান বাজলোনা
এলো বিষাদের তান ।
শ্যামলীর ভাষা ফেলে যাওয়া আশা ,
মনের কোটরে বারে বারে মারে হ্যাঁচকা টান ।।
মর্মে মর্মে ব্যাথ্যা হৃদয়ের ভাষা,
না বলা কথা দিনে রাতে শব্দের অনু:রনন ।
বেঁচে বেঁচে মরা জীবন নদীর ধারা আজ
শুস্কম কাষ্ঠমে ভরা,
পড়ে আছে শুধু উৎপীড়ন ।।


অবহেলা,অবজ্ঞা,
মায়াছলে প্রেমকথা,লুকোচুরি ছেলেখেলা,
দিনে রাতে বার বার
গোধূলি সায়হ্নে জলভরার ছলে মেঠোপথে
মেলাতো নয়ন কখনোও বা এক কি দুবার।।
দাঁড়ায়ে থাকি প্রতীক্ষার রাশি তিন মাথার
বটের তলায় জমে হতো হিমালয় ।
প্রণয়ের টান মানেনা কোনো বিধি নিষেধের বান
ঝটিকা দার্শনে হতো ক্ষয়।
আসমানী শাড়ী, কলাপাতা হাঁড়ি পড়ে আছে
আর মোর মন মরুভূমি ।
গোধূলি ও প্রাতে দ্বি:প্রহর কিংবা রাতে
আঁখি যুগল খোঁজে শুধু তুমি আর তুমি ।
চেনা চেনা মুখ বিষাদে ভরা সুর,
জীবন দংশনে মুছে গেছে দর্শন ।
পালকির গান বনবিতান,কুহেলির টান,
অযাচিত সাজা সবই নিস্ফলা গর্জন ।।