বেলা গেল
########


সারি সারি বলাকা নীল দিগন্তে যায় উড়ে,
বলে যায় দেখা হবে আবার গোধূলিকালে শান্ত নীড়ে,
বায়ু তরঙ্গে ডানার গন্ধে স্বপ্ন আসে ঝরে,
পূবালী হওয়ায় ভোর বেলায় প্রভাত এলো অগোচরে।


শীতের শিশির স্নাত সকালে,
চড়ুই ,এক পা, দু পা ,ফেলে,
কিচিরমিচির শব্দে কত কথা বলে,
ছোট্ট শিশু শাল মুড়িতে ফোকলা দাঁতে হাসে,
মায়ের মুখে চাঁদের হাসি নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে।
গোবর জল ছড়ার লাগি ব্যস্ত কাকী ঘটি হাতে
পিছে পিছে ছোট্ট শিশু খিলখিলিয়ে
গুটিগুটি হাঁটে।
গোয়াল ঘরে শব্দ করে গোপালের ওই দল,
রবির আলো আসছে ঘরে গোয়াল ঘরের ফোকর ধরে।
বেণু কাকা চেঁচিয়ে বলে থাম থাম,
এবার চল।


দুর্বাদলের সবুজ আগায় শিশির করছে টলমল।
লক্ষ্মী কাকী শঙ্খ বজায়
হৃদয় ভরা খুশির টানে ,
ঘরে আজ বাজবে সানাই
আশাবরির মধুর তানে।
হরিদাস পুরের জমিদারের বড় ছেলের সাথে
তার মেয়ের হবে আজ কণ্ঠীবদল।


সময় মতো কণ্ঠীবদল হলো সমাপন
হাসি খুশি বিদেয় দিলো
মেয়ের নতুন ঘরে হল আগমন।
তিন মাস পরে নতুন করে আবার হলো ভিড়
ঘর আছে,দুয়ার আছে, উঠোন আছে,
শুধু বদলে গেছে মুখের হাসি
বদলে গেছে বুকের ভাষা,
শোকের ছায়ায় করছে সবাই বিড়বিড়।


অজানা এক জ্বরের তাপে
অকালে মেয়ে আজ শ্মশান ঘাটে।
ডিগ্রি ধারী, ডাক্তার আছে,
ঝাঁ চকচকে হাসপাতাল আছে
তাতে কি আর রোগী বাঁচে!
জীবন ধারায় হয়ে গেছে অনেক
কিছু অদল বদল
একটা প্রথা আগের মতই হলো ঘটা করে ,
মরার আগে মরার পরে
ফুল চন্দন আর মালায় করল তারে বরণ।
বেলায় বেলায় মায়ার খেলায়
গেল গাঁয়ের মেয়ে বেলা,
অনেক কথাই বলে গেল
তবু অনেক কথা রইল নাবলা।