জাত গেলো
::::::::::::::::::::


তরুণএই প্রজন্মের ডাকাবুক,
ছন্নছাড়া মহেশ পুরের ছেলে ,
গ্রামের কিছু বাক্য বাগিস,
নীতি বোদ্ধার পড়ল রোষানলে।
বোদ্ধা যারা হতাশ তারা
আজ একি দিন এলো,
পাড়ায় পাড়ায় জিগির তুলে
বাপ ঠাকুরদার সংস্কারটাই গেল।
সর্বনাশের ছায়া দেখে চোখে মুখে
কাটবেনা আর জীবন নিত্য দিনের নিদ্রা সুখে।


গেলো গেলো রব তুলে
জাত ধর্ম গেছে ভুলে,
বানু বাড়ুর্য্যের ছোট ছেলে বিয়ে
করেছে মতি বাগদির ছোট মেয়েকে।
মহেশ মোড়ল ডাকলো সালিশি,
সভা মন্দির মাঠে রোববার রাতে।


মন্টু মাত্তবর চেঁচিয়ে বলে ছি ছি হরেন
একি অনাচার আজ দেশে ঘরে।
তাহার কথায় তাল ধরে,
নবীন রায় দিলো জুড়ে পই পই
করে বলে ছিলাম বাণু নজর দে পোলাটারে।


তুই আমাদের জাত ডোবালি নিজেও
গেলি পোলাপানে এ কি শিখালি।
বানু বাড়ুর্য্যের বুকের ব্যাথ্যা বাড়লো সভা মাঝে
তাতেও কি আর বোদ্ধা থামে,
না তার  নিদান থামে।
ঘাটের মড়া তরনী বুড়ো খুকিয়ে কুকিয়ে বলে
ওঠে হে রে ছোড়া,
দেশে কি এতই আকাল আর ছিলোনা জাতের কনে?
শেষে কিনা বাগদি মেয়ে।
মরার আগে গ্রামে ঘরে ঘোর অনাচার
অকালে বেরুবেরে আমার শেষ নিঃশ্বাস।


এপাপ রাখবি কোথায় বানু ভাই
তোর দুপাতা ইংরেজি জানা ছেলে
বংশের মুখে দিলো ছাই।
সংস্কারের হওয়া গ্রামে এলো শিক্ষার ঠেলায়
এবার সবার জাত গেল।


মোড়ল,মাতাব্বের বাণীর কাছে মাথা ঝুকে বিদ্যাধারী,
বানুর ব্যাটা মাথা উঁচিয়ে বলে সবার
উপর মানুষ সত্য তাহার উপর কিছু নাই।
তোমাদের মন গড়া দৈব্য বিধান আমি মানব নাই।
মহেশ মোড়ল ধমকে বলে গ্রাম ছেড়ে
বেরিয়ে যাও মানে মানে।
করলে দেরি বাপ বেটাকে মুন্ডন করে নাকখত
দিতে হবে মন্দির প্রাঙ্গনে।


শেষ হলোনা কথা তার,শেষ নিঃশ্বাস
বানুর বেরিয়ে গেল আজ ।
কেউ এলোনা ছুঁতে মড়া,বানুর বেটা হাতে ধরে পায়ে পড়ে,
একাই নিয়ে গেল সোনামুখী নদীর পাড়ে।
আগুনের চিতায় নিথর দেহ শেষ হলো,
বাগদির মেয়ে ,বানু বামুনের ছেলে
রাতের অন্ধকারে গ্রাম ছাড়লো ।