যুথিকা আজ
:::::::::::::::::::::


দীঘিটা আজ ভীষণ শান্ত,
নেই কোনো তরঙ্গের আলোড়ন।
যুথিকা শান্ত দীঘির পাড়ে বসে,
জলের উপর নিজের অশান্ত,
বিবর্ণ মুখের প্রতিবিম্ব দেখে।
অশান্ত মনে নিজের মধ্যে নিজের
চলেছে নিরন্তর আন্দোলন।
কোনো কিছুই ভালো লাগছে না,
নিজের মনকেও বোঝাতে পারছেনা।


অশান্ত মনের অস্থির বাণে
সময়  খাচ্ছে কুরে কুরে।
যুথিকা আজ অসহায় ,
মনের আশা যাচ্ছে মরে।
কয়েক দিন আগেও
দীঘির পাড়ে   বসে,
নয়নে নয়ন রেখে
কত স্বপ্ন বুনেছে একসাথে।


মনের তরঙ্গ, জলের তরঙ্গ
আর দীঘি মিশে হতো একাকার।
দীঘি আছে,জলও আছে,
পার্থ্যক্য-
অশান্ত মনে জায়গা করেছে হাহাকার।


ছুটির পরে কতদিন কলেজের মাঠে
কত দিন এই দীঘির ঘাটে
কেটেছে কত মধুর সময় দুজনের,
সাঁঝ হয়েছে,অন্ধকার
গেছে বেড়ে দুজনার আনমনে।


সবই আজ বিবর্ণ দিনের  পরিহাস,
অকালে গেল প্রানের আকাশ,
চাকুরীর প্রথম দিনে,
স্বপ্ন চোখে রাশি রাশি,
একুশের তরতাজা প্রাণ
কেড়ে নিল শহুরে বাসের
রেষারেষি গতি।


বিষণ্ন মনে !বিরহ ক্ষণে!
যুথিকা মনে করে,
গত একমাস আগে স্বপ্ন
সাজিয়েছি  দুজনে
ছোট্ট একটা বনবাংলোর মত ঘর,
তারি মাঝে,বাবা,মা, আমি তোমার
পথ চেয়ে কাটাব প্রহর।


বাগানে সাজাবো ডালিয়া,
চন্দ্র মল্লিকা,সাথে জুঁইয়ের মেলা,
চায়ের চুমুকে ভরে যাবে মন
সাথে কিছু খুনসুটি সারা বেলা।


সন্ধ্যা প্রদীপ তুলসী তলে জ্বালিয়ে,
প্রণাম করবো তোমার পায়ে হাত দিয়ে।
কপালে টিপ সিঁথিতে সিঁদুর
পায়ে লাল আলতা সাথে নূপুর ।
হাতে নোয়া,মোটা সাদা শাঁখা,
বিপদ মুক্তির লাল পলা।
লাল পাড় সাদা শাড়ি আর
গলায় সাতনলী হারের মালা।


কত ছোট ছোট স্বপ্ন ছিল
মনের ঘরে।
কার নজর পড়ল কে জানে!
কেড়ে নিল চিরতরে।
মনের মাঝে আশা গুলো মরে গেল
তোমার চিতার প'রে।


আকাশ ,
তোমার যুথিকা আছে,
দিঘিও আছে জলও আছে,
সবকিছু শান্ত আজ।
ঢেউ নেই, তরঙ্গ নেই,প্রতিবিম্ব নেই,
নেই আর মনের মাঝে কোনো আশা।
শুধু মরে মরে বেঁচে থাকা !
বদলে গেল বাঁচার পরিভাষা।