মায়ের চোখে বিন্দু বিন্দু জল
****************************
কত পথ ঘুরে,শত ক্রোশ দূরে
জীবিকার টানে আছে বাছা মোর,
গরমে শীতে মরে,
কত ঘাম যায় ঝরে।
মায়ের মন বিচলিত, সদা চঞ্চল,
চোখের আড়ালে বাছা মোর কি করে?
বাঙালি করে রাখিনি কোলে,
বন্ধন দিয়েছি খুলে।


বাছা মোর আজ কত দূরে
মনে জাগে ভয় যদি কিছু হয়!
কেবা আছে তার সাথে?
কেবা আছে মিলে মিশে?
কেবা কথা কয়?
সঙ্গ দোষে যদি বিপথ গামী হয়?
জাগে শুধু মনে কত অজানা সংশয়।


মান অভিমানে কেবা কতটুকু জানে?
শরীরে ব্যাধি যদি বাসা বাঁধে?
কে করে পরিচর্যা? কেবা তার খোঁজ লয়?
শত শত সংশয়ে মায়ের নিদ্রা নাই দুটি চোখে।
কিছু দিন আগেও মায়ের সময়
কেটেছে আগলে আগলে রেখে।


পেটে খিদের জ্বালা করছে টন টন
পিছে হ্যাচকা মারে মায়ের মন।
বন্ধন দিনে দিনে হয়েছে অসহায়
ঘরে বসে বসে জীবন
জীবিকা না যায়।
চুপি চুপি সময় যায়
রাতি যে পোহায়।
ভেবে ভেবে জননী মোর
দু চোখে অশ্রু বহায়।
অপেক্ষায় থাকে বাছা মোর
কবে ফিরবে বাসায়।


কাক ভোর শেষে সাদা গাড়ি এসে,
দাঁড়ালো নিকানো উঠোনে ।
দু-চারিটা বাবু নেমে
প্রতিবেশি সনে কিছু কথা কয়।
উতল মায়ের মন,আঁখি করে ছল ছল।
পরিজন সনে সুধায় জনে জনে
ওরে কি হয়েছে বল মোরে একবার বল।


অনতিকাল পরে এক বাক্স এলো ঘরে।
ছেলে এলো ফিরে !
নিঃশব্দে বাক্স বন্দি হয়ে,
সে যে আর কথা না কয়।
উঠোন মাঝে নিথর দেহ,
নিথর মা,
নিথর মায়ের মন।
অনেক কষ্টে তাকিয়ে দেখি
মায়ের চোখে গড়িয়ে পড়ছে
বিন্দু বিন্দু ফোঁটা ফোঁটা জল !