সাগরিকা সপ্তম পর্ব
**********************
নৌকা গুলো কেমন করে সারি ধরে
প্রতিদিন যায় মাঝ সমুদ্রে।
ফিরে আসে খুশি নিয়ে
নৌকা ভরে মাছ নিয়ে।
নিত্য দিনের জীবিকা  আর
কত কষ্টে কাটে জীবন।
হরিহর তোর কি দেখে মায়া হয় না
কষ্ট হয় না কেমন?


দাদাবাবু
ওদের কষ্ট ওরা পারে দিনে রাতে বইতে,
আপনার কষ্ট পারা যায় না
দিনে রাতে সইতে।
কেউ না বুঝুক আমি বুঝি
কষ্ট আপনার কোথায়।
কেউ না জানুক আমি জানি
এ ভাবে বাঁচা কি যায়।


শুনুন দাদাভাই,
আপনার দুর্ঘটনার পরে,
গেলুম আমি দিদিমনির ঘরে
গিয়ে দেখি দিদিমণি ব্যস্ত তখন
এক বন্ধুর কাছে ফিরে যাবার তরে।
বললাম-
দাদাবাবু আপনাকে কাতর স্বরে ডাকছেন
একটি বার সামনে দাঁড়ান
দাদাবাবু খুব কষ্ট পাচ্ছেন।
বললেন বাবু তোর তুই দেখিস
রইল তোর কাছে।
ফিরে যাচ্ছি বাপের বাড়ি
ওখানে আত্মীয়স্বজন,বন্ধু বান্ধব
সবাই আমার অপেক্ষায় আছে।
মরুক বাঁচুক বাবুতোর
যেমন আছিস থাকিস সারা জীবন ধরে।
একটা পঙ্গু মানুষের কাছে থেকে পাবো কি?
আমি নিজেই যাবো মরে।


হারিহর আবার বলছি,
তোর দিদিমণি খুব ভালো মনের মানুষ
তোর বুঝতে কোথাও ভুল হচ্ছে।
বাবু আপনি বড় ভালোমানুষ
দোষ পান না !
শুধু কত্তাবাবু,মায়ের কথাটা ভাবুন।
তোর দিদিমণি আসবে ফিরে
সে বিশ্বাস আমার আছে।
ততদিন এমনি করে বেঁচে যাব
তুই শুধু থাকিস আমার সাথে।


আমি আর পারবনা বাবু
বয়স হয়েছে অনেক।
আপনি নিজে নিজেই সামলে থাকুন,
হয়তো বাঁচব আর কিছু দিনেক।
বক বক করে হরি গেল নিচের ঘরে,
আমি আজকে আর কফি দিতে
আসবো না আর উপরে।


রাত ধীরে ধীরে গভীর
অন্ধকারে ডুব দিল,
নক্ষত্রের মিটমিট আলো ছেয়ে গেল।
তারা গুলো নির্বাক হয়ে তাকিয়ে রইল
তদের নিস্তব্ধতা আকাশের
নীরবতার সাথে মিশে গেল।
নীরবতায় কোনো ফারাক রইলো না
দুটো জগতের,
একটাই তফাৎ এক আকাশের
স্বপ্ন গুলো নিঃশব্দে ভেঙে যাচ্ছে।
আর এক আকাশ কারো জীবনে
নিঃশব্দে স্বপ্ন সাজিয়ে দিচ্ছে।


ক্রমশ................