শীতঘুম
:::::::::::::
শুনসান রাস্তা, নিস্তব্ধ চারিদিকে
কেউ নেই পথের ধারে।
প্রাণহীন জীবন্ত শহর যত দূর
চোখ যায় অন্ধকারে।
কোথাও আলো,কোথাও
অন্ধকার,কোথাও বা রশ্নির
দেখা কিঞ্চিত মেলে,
কাল পেঁচা বিকট স্বরে গেল উড়ে,
নিয়ন আলোয় ছায়া ফেলে।


কনকনে ঠান্ডা নেই,
শীতের রাত এখনও হয়নি গভীর,
বাড়ছে কুয়াশার  চাদর।
ভূমিহীন,গৃহহীন এক মা,
দুই ছেলে রাস্তার ধারে
কম নেই মায়ের আদর।
ছেলে দুই মত্ত খেলায় আপন মনে,
কেউ আগে কেউ পরে।
সাথে জুটেছে রাতের জোনাকির,
আলো টিম টিম করে।


কিছু ডাল,কিছু চাল আর
একটা কি দুটো আলু হাঁড়িতে।
দিনভর ঘুরে ঘুরে কিছু আজ
পেয়েছে মা দুহাত পেতে।
রাস্তার ধারে মায়ের সাথে
ঘর বেঁধেছে,তিনটি প্রাণী।
পাশদিয়ে বয়ে গেছে দুর্গন্ধেভরা,
শহরের পয়ঃপ্রাণালী।


নিজ হাতে তৈরি করা চুলা,
তিনটি ইটে অনেক খেটে খুঁটে,
কিছু আধ ভেজা শিশিরে কাঠ,
আছে সাথে জ্বালানী হিসেবে।
চুলা জ্বলছে না ধুঁয়ায় ভরে
আছে  চারপাশ।
বাঁশের চোঙায় ফুঁ দিচ্ছে জননী,
চোখের জলে চেষ্টা আর দীর্ঘশ্বাস।


কিছু সারমেয় খাবারের খোঁজে
তাদেরই আসেপাশে
ঘুরা ঘুরি করে।
তারা কি খাবে পেটে কতটা যাবে?
তারই মাঝে এক অংশীদার
দাঁড়িয়ে হাঁ করে।


রাত বাড়ছে একটু একটু করে
সাথে ঠান্ডা কনকনে।
দুই ছেলে মা একটা কম্বলের
তলে আছে কোনো ক্রমে।
সকাল হলো ছেলে দুটো এক পা
দু পা করে খেলছে।
কম্বল টেনে টেনে মুখ তুলে দেখে
মা কেন এখনো ঘুমিয়ে?


জানেনা তারা,
কি হারিয়েছে ও সর্বহারা,
জানে শুধু বিধাতা একা।
চিরতরে মা,শীত ঘুমে ঘুমালো
আর কোনো দিনও যাবে না দেখা।


নির্বোধ দুই শিশু
অজ্ঞাত নাম,পরিচয় ।
আনন্দে খেলা করে যাবে বেড়ে??
শুধু জানি অনাথের দলে আরো
দুজন গেল ভিড়ে!
সংখ্যা দুটো গেল বেড়ে।