ছোটবেলায় যখন লন্ঠনের আলো জ্বেলে,
বাল্যশিক্ষার বই পড়তাম মায়ের কোলে।
একটাই প্রশ্ন করতাম বারে বারে,
চাঁদ তুমি কেন এত দূরে?
গ্রীষ্মের ছুটিতে গিয়ে মামার বাড়ি,
সুপারি গাছের খোলে চড়তাম গাড়ি।
পড়ে গেলে গালি দিতাম অন্ধকারে,
চাঁদ তুমি কেন এত দূরে?
তারপর উঠলাম যখন উপরের ক্লাসে,
সন্ধ্যাবেলায় চুমুক দিয়ে দুধের গ্লাসে।
সাদা রঙ দেখে মনে পড়ে,
চাঁদ তুমি কেন এত দূরে?
গিয়ে ভর্তি হলাম যখন কলেজে,
জীবনে প্রথম মজলাম প্রেমের আমেজে।
প্রিয়তমাকে বললাম প্রেম নিবেদন করে,
চাঁদ তুমি কেন এত দূরে?
যেদিন থেকে করলাম কর্মজীবনে যোগদান,
মনে পড়তো জ্যোৎস্নালোকিত বাড়ির উঠান।
বসে ভাবতাম ভাড়া বাড়ির ঘরে,
চাঁদ তুমি কেন এত দূরে?
যেদিন মিলনের সুরে বাজলো সানাই,
চারিদিক ভরিয়ে দিল আলোর রোশনাই।
এতো আনন্দ কিভাবে রাখতাম ধরে,
চাঁদ তুমি কেন এত দূরে?
যখন এলো ফুলশয্যার বাসর রাত,
ঘোমটা তুলতে বাড়িয়ে দিলাম হাত।
বুকে জড়িয়ে জিজ্ঞাসা করলাম তারে,
চাঁদ তুমি কেন এত দূরে?
যেদিন প্রথমবার দেখলাম সন্তানের মুখ,
উপলব্ধি করলাম এক অনির্বচনীয় সুখ।
সবাই যখন আশীর্বাদ করলো প্রাণভরে,
চাঁদ তুমি কেন এত দূরে?
আজ যখন আমি একেবারে একা,
পূর্ণিমার সঙ্গে হয় প্রতিমাসে দেখা।
নালিশ করি একরাশ হতাশার সুরে,
চাঁদ তুমি কেন এত দূরে?