হে নবীন, তোমারে করি আবাহন,
তব আবির্ভাবে মুছিয়া যাক শোক-তাপের সাতকাহন।
আজি নবোদয় হইল এই ভুবনে,
প্রেমের মুরলি বাজিয়া উঠিল মধুবনে।
বিগত বৎসরের সমস্ত কালিমা ঘুচাইয়া,
বিহঙ্গকূল জাগিয়াছে রঙীন পেখম নাচাইয়া।
এতকাল ছিলেম আমিও কুম্ভনিদ্রায় শায়িত,
আজি হইয়াছি নবজাগরণে জাগরিত।
দুঃখ-দুর্দশার ইহলোক হইতে বহুদূরে,
যেন আসিয়াছি এক রুপকথার বৈকুন্ঠপুরে।
দেহমনে অনাবিল আনন্দধারা বহিয়া চলিতেছে,
তাহার শীতল স্পর্শে পাষান হ্রদয়ও গলিতেছে।
বাতায়ন যেন আজি এক অনির্বচনীয় দর্পন,
রুপ-রস-গন্ধ-শোভা করিতেছে বিকিরণ।
মুখরিত কত পল্লব, আন্দোলিত কত তৃণলতা;
চতুর্দিকে বিস্তার করিতেছে এক ভাব-বিহ্বলতা।
সুনীল গগনে কূজন-মুখর বিহঙ্গের ভিড় জুটিয়াছে,
মাতৃক্রোড়ে অবুঝ শিশুর মুখমণ্ডলে হাসি ফুটিয়াছে।
সোনালী রবি রুপালী শশীর আধিপত্য নিয়াছে কাড়িয়া,
নব নব ছন্দে ছুটিতেছে তটিনী কুলুকুলু শব্দ ছাড়িয়া।
মৃদুমন্দ বায়ু প্রাণ সঞ্চারিতেছে মাধবীলতার ধড়ে,
কামিনী পুষ্প ঝড়িয়া পড়িতেছে ভ্রমরের ভরে।
এই মাঙ্গলিক প্রাতে, জোড়হস্তে করি শুধু এই নিবেদন,
বিধাতার চরণে যেন চিরকাল থাকে মোদের আসন।
তাঁহার অপার করুণার জোয়ারে নিত্য ভাসিয়া,
থাকি যেন মোরা সর্বদা পরস্পরকে ভালোবাসিয়া।
নবোদয় হউক তাই সকলের জীবনে,
সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি লাভ করুক সর্বজনে।