একে একে পার করে শৈশব-কৈশোরের সিঁড়ি,
পুরুষের জন্য যে অপেক্ষা করে বিবাহের পিঁড়ি।
কুমারত্বের ডালভাত খেতে খেতে হলে অরুচি,  
তারও ইচ্ছা হয় খেতে দাম্পত্যের মাংস-লুচি।  
সিঁদুরের ফোঁটা দিয়ে সাজানো হয় রঙীন খাম,  
সোনালি কালিতে লেখা হয় নিমন্ত্রিতদের নাম।  
শেষ বয়সে কে দেখবে ধারণার বশীভূত হয়ে,  
নির্দিষ্ট দিনে দুর্ঘটনাস্থলে সে হাজির হয় গিয়ে।
শুভদৃষ্টির ঠিক আগে দুটি পান পাতার আড়ালে,    
সে চিন্তা করে অদৃষ্টে কি যে আছে তার কপালে।
শেষে কুঞ্জে ফুল ছিটানোর পরে করে মালাবদল,
তখনও সে বুঝেনা তার কাঁধে যে চাপছে জগদ্দল।
বৌভাতের সকালে তুলে দেয় ভাত-কাপড়ের থালা,  
এভাবে সাঙ্গ হয় তার গার্হস্থ্য জীবনে প্রবেশের পালা।  
নববধূর হাতের মেহেন্দিতে সে নিজের নাম খুঁজে,  
তাকে জড়িয়ে ধরে ফুলশয্যায় সে দুই চোখ বুজে।
তার বাসর রাতের গোলাপ সকালে দলিত-মথিত,      
সে হয়ে থাকে দায়-দায়িত্বের দেওয়ালে প্রোথিত।  
বছর ঘুরলে তার বাড়িতে সন্তান জন্মগ্রহণ করলে,  
তার পিতৃত্বের অবদান ঢাকা পড়ে মাতৃত্বের তলে।
তার পরিবারের পুরানো পরম্পরা-রীতি-রেওয়াজ,  
অর্ধাঙ্গিনীর কাছে কুপ্রথা-কুসংস্কারের কুচকাওয়াজ।  
বহু প্রচেষ্টার পরেও সে পায়না জীবনসঙ্গিনীর আস্থা,    
উভয়ের মাঝখানে তখন তৈরী হয় এজমালী রাস্তা।      
হয়ত প্রথমদিন থেকে তার প্রতি বাম ছিল বিধি,      
তাই একেবারে সীমিত হয়ে যায় তার প্রেমের পরিধি।
তার স্বপ্নের সাজানো শিশমহল ভেঙে হয়ে যায় চুরমার,
অবিশ্বাস ও সন্দেহের আগুনে সংসার পুড়ে হয় ছারখার।
তার অধিকারের উপর বসানো হয় বিধিনিষেধ আর শর্ত,
এভাবে নীরবে নিভৃতে কাঁদে তার প্রতারিত পুরুষত্ব।