তীব্র ঝড়ের বিধ্বংসী দাপটে
মাঝপথেই থামাতে হয়েছিল জুড়িগাড়ি,
আবলুস কালো আকাশের জঠর চিরে
মুহুর্মুহু বিদ্যুৎস্ফুলিঙ্গের তান্ডবলীলা
উপেক্ষা করে দরজা খুলে কোনোমতে
নেমে এলেন অনুচরবেষ্টিত হয়ে;
পরনের ধুতি-নাগরা জুতো ভিজে
গেছে মুষলধার বৃষ্টির দাপটে,
চোখেমুখে অজানা আতঙ্কের লালিমা
নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দ্রুতপায়ে
কোচোয়ানের কথায় সামনের মন্দিরে ... ।
পাষাণের সিঁড়িতে পূজারীরা দাঁড়িয়ে,
চোখেমুখে বিশৃঙ্খল অভ্যর্থনার রঙ
বেপরোয়া পদক্ষেপে মাড়িয়ে গিয়ে
চাতালের তলায় নির্লিপ্ত দাঁড়ানো;
চৌধুরী বংশের অন্যতম কুলাঙ্গার,
তাকিয়ে থাকে ভাবলেশহীন চোখে
যেখানে শোরগোল পড়েছে কেদারা আনার,
কেউ কেউ দূর থেকে লাম্পট্যের মূর্তি
দেখছে অবাক অনুভূতির মিশেলে,
বিস্ফোরণের ভীমনাদ কাঁপিয়ে দিয়ে
যায় ব্রহ্মান্ডের দুর্বল ত্রিকাস্থি,
মন্দিরের অন্দরমহল থেকে ত্রাহি ত্রাহি
রব ভেসে আসে অসহায় নারীকন্ঠের;
যেন মহাপ্রলয়ের দুন্দুভি বেজে উঠেছে
কোথাও উন্মাদ গাছে গাছে
ছড়িয়ে যাওয়া ঝলকের চকিত ঝিলিক
নড়িয়ে দিয়ে যায় চাতালের থাম,
জীবন হাতে নিয়ে হুড়মুড়িয়ে সবাই
অন্দরমহল যাওয়ার দরজায় কালঘাম
ছুটে যায় অগোছালোভাবে-এদিক-ওদিক,
বজ্র্রারোষে ধ্বসে পড়ে বাইরের খিলান
তীক্ষ্ন আলোর চাবুকের আঘাতে
মুহূর্তের ছিন্নবিচ্ছিন্ন ভগ্নাংশে,
ধরা পড়ে এক শুভ্রবসনার রক্তশূন্য মুখ,
ওষ্ঠাধরে ঈশ্বরের নীরব নামজপ,
চোখের পাতায়-কপালে-গালে অবাধ্য
বৃষ্টির নিমখুন ছিটেফোঁটা
গড়িয়ে পড়ছে আলগাভাবে নিরাবরণ
কন্ঠ চুঁইয়ে চুঁইয়ে,
শব্দের অতর্কিত আক্রমণের প্রচন্ডতায়
কুঁকড়ে যাচ্ছে ফুলের মত শরীর বারবার;
গাঁজায় চুর হয়ে থাকা লম্পটের
রক্তলাল নজর পলকহীনভাবে তাকিয়ে
থাকে সেদিকে অনড়-অসাড়
যেন থমকে গেছে বাউন্ডুলে হৃৎস্পন্দন
বেয়াড়া কামনার জরিষ্ণু কিনারায়
গোলাপের পাপড়ি ভিজে যাচ্ছে
সাদা আঁচলের নিটোল গভীরতায়
এ রাত ভয়াবহ নয়, মদিরতার
আঁধার নির্জনতার গহীন দুরত্বে
চরিত্রহীন অনুভূতিরা প্রেমে পড়ে



এই প্রথম ... হ্যাঁ এই প্রথমবার ... !