ঐসব ন্যাকা ন্যাকা পরিসংখ্যান যত!
গুটিকয়েক বুর্জোয়া ক্রিটিক আমাকে
আমার সাফল্যের খতিয়ান শোনাবে,
আর আমি শালা গদগদ হয়ে যাবো!
একবার লাইমলাইটের তলায় চলে আসলে
তারপর বান্দা ছাইপাঁশ যা-ই লিখুক,
তার বাজার তুঙ্গে-সমালোচকেরা তার পিছন পকেটে,
সাফল্যের পা-চাটা কুকুর সব!


নকশাল আমল থেকে নাটক লিখছি
সাধারণ মানুষদের জন্য,
গুলে খেয়েছি থিয়েটার জিনিষটাকে
কিন্তু আমি জানি আমি অসফল …


সাধারণ মানুষ মার্ক্স পড়েনি,
ফ্রয়েড পড়েনি-গোর্কি পড়েনি,
স্ট্রিন্ডবার্গ বা ব্রেক্টের নাম শোনেনি,
তারা জানেনা মেলোড্রামা কাকে বলে,
তারা জানেওনা যে তারা প্রোলেতারিয়েত-
অসহায়-শোষিত শ্রেণীর লোক,
ঐ যে সোনাগাছির ঐ পাচার হওয়া টুম্পা
যাকে নিয়ে দু-দু’টো নাটক লিখলাম,
সে একটাও দেখতে এলোনা!
কুমোরটুলির প্রতিমাশিল্পী বৃন্দাবন
যার চরিত্রে দিনরাত এক করে অভিনয় করলাম,
সে আমাকে চেনেনা-নামও শোনেনি!
বলতে লজ্জা হয়,
এসপ্লানেডের ফুটপাতে গেঞ্জি বিক্রেতা
কিংবা লোকাল ট্রেনের ঝালমুড়িওয়ালা,
কেউ কোনোদিন আসেনি আমার নাটক দেখতে;
আসবেই বা কেন?
নাটক হল শিল্প আর শিল্প হল বিলাসিতা,
যাদের সকালে উঠে পেটের ভাতের
কথা ভাবতে হয় তাদের আবার লাক্সারী!


ভাঁড়োয়া দালালরা আমার নাটক দেখে
তারিয়ে তারিয়ে অসহায়তার মজা নেয়,
আমি হয়ে উঠি শোষণকারীদের নায়ক,
পরিসংখ্যানের নিরিখে আমার জীবন একটা
বেশ সাজানো-গোছানো নাটক হয়ে ওঠে,
এই গ্র্যাঞ্জারহীন ট্র্যাজেডি আরকি …