মানিব্যাগটা কুড়িয়ে পাওয়া গেছিল
শালবনীর জঙ্গলে
রক্ত আর ধুলোমাখা জমি জরিপের সময়,
নীরবে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল
সহকর্মীদের জিজ্ঞাসু নজর এড়িয়ে
বড়োসাহেবের তদারকির আড়ালে।


কলকাতার ঘিঞ্জি বস্তির অলিগলি
পেরিয়ে একটা ঝুপড়ির ভেতর,
যেখানে এসে মিইয়ে যেতে থাকে
বুভুক্ষু শিশুর কান্না কাতর
শুকনো আলোর মেঝেতে পড়ে
সেই মানিব্যাগ, লাশের মত নিথর।


গেরিলাপ্রধান বিষ্ণুর লাশ লোপাট
হয়েছে রাতের আঁধারে গোলাগুলির সময়,
চুপিসারে-অগোচরে পড়ে থাকা এই মানিব্যাগ
বানচাল করে দিতে পারতো পরিকল্পনা।
বন্দুকের নলকে আমরা কবে ভয় পেয়েছি!
এখন শুধু বিদ্রোহ থিতিয়ে যাওয়ার ভয়।


মানিব্যাগের ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো
কিছু অপ্রয়োজনীয় কাগজ আর কিছু টাকা,
একটা বহুপুরোনো মাও-সে-তুং-এর ছবি
জীর্ণ অথচ আদর্শের কিনারা আঁচড়হীন
শরীর দুমড়ে-মুচড়ে দলা পাকিয়ে গেলেও
সশস্ত্র বিপ্লবের আগুন হবেনা ক্ষীণ।


বেরিয়ে এল একটা শতভাঁজ করা
সাংকেতিক চিঠি-বিশ্বাসঘাতকদের নাম,
আত্মসমর্পণ আর দুর্বলতার আঘাতে জেরবার
স্কোয়াড ভেঙে পড়ছে তাসের ঘরের মত;
রয়েছে টাকার লোভ-সুস্থ জীবনের লোভ
তাই মাড়িয়ে দিয়ে গেছে শত শত আর্ত মানুষের ক্ষত।


আরো একটা সাংকেতিক চিঠি
সেইসব জারজ নেতা-মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে
যারা বিপ্লব কিনে নিতে চায় অর্থ দিয়ে
কিংবা নারীদেহের গোপন লালসা বাড়িয়ে;
গণতন্ত্রের নামে চালিয়ে যাওয়া শোষণই দেবে
জনগণের হাতে বিদ্রোহের গরম লাভা ছড়িয়ে।


রাষ্ট্র দাবিয়ে রাখতে পারবেনা সে দাবানল,
বেয়োনেটের ধারালো ফলা দিয়ে
প্রতিবাদের ফুলকি বেরোতে থাকবেই
হাজারো অত্যাচারের জঠর চিরে,
হাপরের আগুনে সংবিধান পুড়িয়ে
আসছে সে সকাল সব বাঁধন ছিঁড়ে!