(একজন ফকিরের আর্তনাদ।)


আমি ভিক্ষার থলি হাতে নিয়ে দাড়িয়ে ছিলাম
বিকলাঙ্গ শরীর নিয়ে
প্রতিবন্ধ মন নিয়ে।
পুরোনো বাজারের চৌরাস্তার ধারে
বড়বাবুর মস্তবড় অফিসের প্রধান ফটকের ধারে
ফুটপাতের ব্যস্ত মানুষের পায়ের কাছেই।
বড়লোকের বিলাসী রমনীর দৃষ্টির কাছাকাছি।
কেউ দ্যাখেনি আমায়।
হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম ওদের সম্ভ্রান্ত চোখের
নজরে পরার আশায়।
কেউ ফিরে তাকায় নি।
হাতজোড় করে মিনতি করেছিলাম।
কান্নার স্বরে কাকুতি মিনতি করেছিলাম।
না খেয়ে থাকা শিশুটির কথা বলেছিলাম।
রোগে বিছানায় পরে থাকা মায়ের কথা বলেছিলাম।
প্রতিবন্ধি অবোধ ছেলেটির কথা বলেছিলাম।
বোবা স্ত্রীর কথা বলেছিলাম।
কেউ ফিরে তাকায় নি।
চিৎকার করে বলতে চেয়েছিলাম,
“ভিখারিদের কি বেঁচে থাকতে নেই?”।
পরক্ষনেই থেমে গেছি লজ্বায়।
ভিখারিদের চিৎকার করার অধিকার আছে কি?
সারাদিনমান দুএকজন হয়তো ভিক্ষা দিয়েছিল।
তবে সেটা আমার নিজের একবেলার খাবারের জন্যও যথেষ্ট নয়।
তবে আমার পরিবার কি না খেয়ে মরে যাবে।
ফকির মিসকিনদের কি বেঁচে থাকার অধিকার নেই?
আমি এখন আর ভিক্ষা চাইবো না?
আমরা অনশন করবো, বিক্ষোভে ফেটে পরবো নিশ্চিত
সমস্ত ফকির মিসকিনের মিছিলে মিছিলে ভরে যাবে রাজপথ।
হয়তো অনেকেই তামাসা করবে,
হয়তো বলবে, "এই ব্যটা ফকিরের বাচ্চা
তোদের আবার মিছিলের শখ।“
আমরা কিন্তু থামবো না কিছুতেই।
রাস্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে হয়তো কেউ জেলে যাবে
নয়তো অনশনেই হয়তো মরে যাবে কেউ কেউ।
তবুও সেটা ভালো।
অনাহারে কুকুরের মতো মরার চেয়ে
প্রতিবাদ করে মরে যাওয়াটা
সন্মানজনক নয় কি?
৫১.২৫