আমার কবিতা মূলতঃ তাদেরই জন্য
       জোটেনা যাদের দুবেলা দু'মুঠো ভাত।
       এ লেখা আমার তাদেরই জন্য শুধু
       হতাশার ঘরে করে বসবাস, মাথায় রাখছে হাত।
       যাদের জিবনে ফাগুণ আসেনা ভূল করে কোন দিন
       আসেও যদিবা উঠোনের কোনে উঁকি দিয়ে চলে যায়।
       জীবন যাদের কণ্টকময় ছন্দসুরবিহীন
       সুখের পাখিরা জানালায় এসে ফাঁকি দিয়ে উড়ে যায়।
       যাদের শিশুরা এক বেলা খেয়ে আর বেলা খাবে কি না
       ভিখার থলিটি ঝাড়া দিয়ে দেখে আর কিছু আছে কি না।
       পেটের তাগিদে হাত পাতে যারা লজ্বার মাথা খেয়ে
       দ্বারে দ্বারে শুধু ঘুরে ফিরে মরে কষ্টের ঘানি পেয়ে।
       জিবন যাদের সংকটময় দ্বন্দদুঃখময়
       ফাগুণ, জৈষ্ঠ ঘুরে ফিরে আসে তবুও দুঃসময়।
       শ্রাবনের দিনে ঘরের মেঝেতে পরে বৃষ্টির জল
       বুকের ভিতরে মেঘ হয় জড়ো ডেকে যায় কলকল।
       জৈষ্ঠ্য কখন এসে ফিরে যায় বুঝতে পারে না তারা
       মধুমাস আসে মধুমাস যায় ছেলে মেয়ে কেঁদে সাড়া।
       ফাল্গুণ সে কি? কেন ফুল ফোঁটে? পাখিরা কেন যে গায়?
       প্রেমের স্বপ্ন, সুখের কবিতা, তাদের কি সোভা পায়?
       বৃদ্ধ পিতার শরীর চলে না কে নিবে তাহারে কাজে?
       ঘরের মেঝেতে বিছানায় শুয়ে পাঁজর ফাঁটায় কাশে।
       আজরাইলের শুভ আগমন কখন হবে যে তার
       হাত পেতে আছে খোদার দুয়ারে কষ্ঠ সহেনা আর!
       বৃদ্ধ মায়ের রোজগারে চলে চাল ফুটে হয় ভাত
       ঝি এর চাকুরি সকাল সন্ধ্যা কখনও হয় বা রাত।
       যুবক ছেলেটি পড়ালেখা ছেড়ে মাস্তানে দেয় নাম
       মায়ে বকা দেয়, ছেলে রেগে কয় এইবার তুই থাম!
       পড়ালেখা করে চাকরি কে পায় চাকরিতে লাগে টাকা
       বিদ্যায় হবে মানুষ সভ্য এই সব বুলি ফাঁকা।
       এই সমাজের উপর তলার যত আছে ধনি, জ্ঞানি
       নীচের তলায় কয় জনে এসে খোঁজ নেয় তা তো জানি।
       ভদ্রলোকের পোশাক পড়েই করে যায় অপরাধ
       আমরা ছিচকে চুন খসলেই ঘটে যায় প্রমাদ।
       ঘরে যে তোমার যুবতি মেয়েটি পড়ালেখা শিখছে যে
       বিনে পয়সায় কোন ভাল ছেলে নিয়ে যাবে, সব মিছে।
       পয়সা ছাড়া যে এই সমাজের নামিদামি সব লোক
       কয়জন লোক কারে দাম দেয়? কার তরে করে শোক?
       বৃদ্ধ বাপের ঘুম নাই চোখে যুবতি মেয়ের তরে
       মেয়েটা যে তার স্কুলে যায় একলাই ফেরে ঘরে।
       ছেলেটা যে তার মাস্তানি করে আড্ডায় মেতে থাকে
       বৃদ্ধ পিতার চোখে আসে জল চিন্তার ফাঁকে ফাঁকে।
       মেয়ে কয় বাবা ছল করে কেন লুকাও চোখের জল
       জগতে যাদের কেই নাই তার খোদাই তো সম্বল।
       দেখে নিও বড় আমরাও হব নিশ্চয়ই একদিন
       সেই দিন শোধ নিশ্চয়ই হবে কষ্টের যত ঋন।
       আমার কবিতা লিখতে গেলেই ভালবাসা-প্রেম-প্রীতি
       এই সব কথা পালিয়ে বেড়ায় হয় বঞ্ছনা গীতি।
       প্রেয়সীর ছবি আঁকতে গেলেই দুখিনির ছবি হয়
       প্রেয়সীর চোখে কাজল ছোঁয়ালে অশ্রুর নদী বয়।


    ৩/২১.......১৫