আমি ভিক্ষা করতে এসেছি
তোমাদের তরবারিখচিত সিংহদুয়ারে
নির্দোষ তরুণিহরিণীর শিল্পীতশিংচিহ্নিত রাজদরবারে
পথপ্রহসিত নিরীহ নারীশিশুর শুকনো কঙ্কালের
মাথানকশিত সিংহাসনপদপ্রান্তে।
ডাকাতি করতে আসিনি তোমাদের সুখবিলাস সামগ্রী।
আমি লুট করতে আসিনি রাজ্যের রত্নভান্ডার,
অমূল্য কোষাগার।
আমি শুধু একমুঠো শান্তি ভিক্ষা চাইতে এসেছি।
আমি চাইতে এসেছি কেবল
আগত আর অনাগত প্রজন্মের নির্বিঘ্ন বেঁচে থাকার শ্বেতসনদপত্র বুঝে নিতে
শান্তি সংলাপের কণ্টকিত সিঁড়ির রক্তস্নাত পদযাত্রায়।
আমার সফেদবিবর্ণবর্ণের মলিণ ছিন্ন ঝুলিতে
সামান্য কিছু প্রাচিণকালের মূদ্রা আছে
কাড়ানাকাড়া কঙ্করমিশ্রিত কিছু খন্ডিত ধূসরিত চাল আছে।
লজ্বাস্থান আড়াল করার মৌলিক চাহিদায়
দুএকটি বস্ত্র যা আছে পরিধানে
তা দিয়ে চলবে কয়েকযুগ
হয়ত অন্তিমনিঃশ্বাস পর্যন্ত।
যদিও ওগুলো অনেকটা মলিণ, কিছুটা ছিন্ন।
ঘরের উপরে ছাউনি আছে দারুণ
কারণ রাত্রিবেলা ঘুমুতে যাওয়া আগে
চাঁদতারকার হৃদয়শীতলকারক মনোহরা প্রকৃতিশোভা
চোখে পরে আমার নিত্যদিন।
পায়ে চলার রাস্তা আছে সীমাহীণ
প্রস্তরিত বা কণ্টকিত যাই হোক।
রাস্তাটা হয়তো স্বপ্নিল নয়
তেমন প্রস্বস্ত প্রস্বস্তিদায়ক নয়।
হয়তো রাস্তার পাশে গলদঘর্ম শরীরের ক্ষাণিক বিশ্রামের যাত্রীছাউণি নাই।
তবুওতো বেঁচেই আছি নিশ্চিত।
এখন শুধু একটুখানি শান্তি ভিক্ষা চাই
আগত আর অনাগত প্রজন্মের জন্যে
তাহলেই আমার শ্বেতবর্ণের মলিণছিন্ন ঝুলিটা
পরিপূর্ণ হবে কোন মতে।
আমার অনাথ ফকিরি ঝুলির জন্য
কোন শীতল শ্বেতহস্তের দেখা মিলবে কি?
কোন একদিন?


৪৬/২৭