৩৬৫ দিনের মধ্যে নির্ধারিত মাত্র কয়েকটি দিন
মাত্র কয়েকটি দিন?
মাত্র কয়েকটি দিন তোমাদের স্মৃতির স্তম্ভটির গা থেকে
ঝেড়ে মুছে ফেলা হয় অকৃতজ্ঞতার স্মারককে।
তারা ধূলো, শেওলা ও সিগারেটের অবশিষ্ট অংশ আর ভগ্নাংশ হয়ে বুঝিয়ে দেয়
জাতি আজ কতটা তোমাদের স্মরণে, স্মৃতিতে ধারণ করে রেখেছে,
কতটা রেখেছে অন্তরের অন্তস্থলে-
ব্যক্তিস্বার্থে গড়া ব্যানার, পোস্টারে ছেয়ে থাকে বছরের সিংহভাগই
তোমার হৃদয়েরর রক্তে রাঙানো ওই স্মৃতি স্তম্ভগুলোর চারপাশ,
এমন কি হওয়ার কথা ছিল
তবে এমন কেন হচ্ছে?
কেন এত অবহেলা, অবজ্ঞা আর অগোচরে
চলে যাচ্ছে তাদের মহিমা, কৃতিত্ব আর অবদান?


ওই যে রাস্তায় মাটি কাটার কাজ করে শ্রমিকের মা,
শহরের ফুটপাতে ফুল বিক্রি করে যে ছোট ছোট হৃদয়গুলো,
কিংবা আবর্জনার স্তুপে যে কচি হাত গুলো খোঁজে
প্রতিদিনের বেঁচে থাকার সম্বল
আজ এত বছরেও তোমাদের ইতিহাস তাদের কারো কারো রয় অজানা-
সারা দিবস মুটে, মজুর, কুলি আর কলে কারখানায় লোহা পেটানো
হার ভাঙ্গা পরিশ্রম করা বাবা
তারাই বা জানে তোমাদের কতটুকু?
তারা হয়তো বা শুনেছিল তোমাদের নিঃস্বার্থ ভাবে
দেশের তরে রক্ত দেওয়ার ইতিহাস
অল্প, স্বল্প গল্প কাহিনী রাস্তার ধারে টং করা চায়ের দোকানটায়
নয়তো বা গুণি মানুষদের আলাপ চারিতায়|


এইটুকুতেই কি পরিপূর্ণতা? এইটুকুই কি ছিল প্রাপ্য?
কেন তাদের সেই গৌরবময় কৃতিত্ব আজও রয়ে যায় অজানায়?


আজও বীর যোদ্ধাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয় অভিমান আর আর্তনাদের সুর
মেকি, ভূয়া যুদ্ধাদের ভীড়ে আর মত বিরোধে
বির্দির্ণ, বিচ্ছিন্ন, বিষণ্ন করে তাদের হৃদয়।


নির্ধারিত কয়েকটি দিন ক্যামেরার আলোর ঝলকানিতে
আর শত ভিড়াভিড়ি, ঠেলাঠেলির মাঝে
কিছু ফুল তাদের স্মৃতির মিনারের বেদীমূলে ছুড়ে দিয়েই কি
প্রকাশ পায় তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা ??
তাদের প্রতি আমাদের পূর্ণ শ্রদ্ধা??
বছরের বাকি দিন গুলো রয়ে যায় নিস্তব্দতায়
বহে না জলের ধার, সরে না ধূলার স্তর বেদীমূল হতে
থাকে না আলোর সমারোহ, ক্যামেরার আলোর ঝলকানি
কেউ এসে দিনের শেষে জালায়নিতো একটি প্রদীপ শিখা
বেদীমূল থাকে শুন্য পুষ্প পাপড়িবিহীন
জড়া পাতা থাকে শুধু বেদীর আঙিনা জুড়ে................


(11/12/2018)