আজ আমরা আহত,ক্ষতবিক্ষত,
গোলামীর জিঞ্জিরে বাধা
রক্তার্ত ক্রীতদাস!!
সময়ের বিবর্তনে আমরা হেঁটেছি
বহুদূর,  
পাড় করে এসেছি
স্বাধীনতার প্রায় পঁয়তাল্লিশ টি বছর।


আমরা দেখেছি,
অনেক দুর্ভিক্ষ,হত্যা,রাহাজানি, গুম ,খুন।
আমরা দেখেছি,
রঙ চটে যাওয়া নীল শাড়ি পড়ে
এক মধ্যবয়সী জননী করুন দৃষ্টিতে
তাকিয়ে আছে ধুলোবালি তে ভরা
পথটি র দিকে।
আমরা
তার অন্তঃকরণ পোক্ত দেওয়াল
ভেদ করে হিয়ার কালো
পাথরে ঘষে ঘষে পরীক্ষা করেছি।
সেখানে আমরা
প্রতীক্ষার অশ্রু ব্যাতিত কিছুই খুজে পাই নি।


আমরা দেখেছি,
এক বৃদ্ধ বাবা আম গাছের ডাল ধরে
নীরবে অশ্রু ফোটা ফেলে শুষ্ক মাটিতে।
আমরা সেই অশ্রু ফোটার কাতর রব
স্পষ্ট শুনতে পেয়েছি।


আমরা দেখেছি,
নীলাদ্রির কান্না-নিয়মের চিৎকার।
যখন কতগুলো পিচাশ ঘিরে ধরেছিল
তাদের!!
আমরা জাহানারা বেগমের অস্ফুট যন্ত্রনা
শিরায়-উপশিরায় অনুভব করেছি!!


আমরা ইয়াজুজ মাজুজ  দেখি নি,
তবে মানুষ রূপী ইয়াজুজ-মাজুজ  দেখেছি এই বাংলায়।
গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে প্রতিষ্ঠিত এ দেশে
আমরা কখনো সমতা দেখি নি।
বরং বৈষম্যের  কালো ছোবল দেখেছি
সর্বত্র জায়গায়।


আমরা দেখেছি,
কিছু মুষ্টিমেয় জন গোষ্ঠী দুর্নীতি করে
কোটি টাকা কামিয়ে  মেতে আছে তারা
কালো টাকা কে সাদা করার ধান্দায়।
আর অন্যদিকে-
ফুটপাতে র ধারে ছেঁড়া কাঁথা গায়ে দিয়ে
না খেয়ে পড়ে আছে
কত কাঙাল!
কত অসহায়!!


আমরা দেখেছি,
গরীবের বুকে লাথি মেরে তারা
কীভাবে বড় বড় বুলি আওড়ায়?
প্রেসের সামনে এসে কীভাবে তারা
সত্যকে মিথ্যা বানায়??


আজ
আমরা শান্তিতে বালিশে মাথা রেখে ঘুমুতে
পারি না।
যখন আমাদের এ ক্লান্ত চোখে
শ্রাবণের কালো সন্ধ্যার মতো
একটু ঘুম আসে,
এ বুকের মাঝ থেকে তীক্ষ্ণ স্বরে  
ভেসে আসা
বুলেটের শব্দে কিংবা ক্ষুধার্ত
শিশুদের কল্লোলে
বীভিষিকাময় রাত্রির মতো লাফিয়ে উঠি
বিছানা থেকে!!


স্বাধীনতার কত বছর পেরিয়ে গেল!


কেটে গেল কত  যুগ!!
তবুও স্বাধীনতার সবুজ টিয়েটি
আমাদের এক রত্তি শান্তি দিতে পারে নি।
- ঘর দিতে পারে নি।
-খাদ্য দিতে পারে নি।
-বস্ত্র দিতে পারে নি।


তাই আমরা ফুটপাতে শুয়ে দিন কাটাই।
ক্ষুধার  জ্বালায়  আমাদের পেট টন টন করলেও
আমরা কাওকে বলতে পারি না যে,
"আমরা ক্ষুধার্ত "


কাদের বলব??
এই সভ্য সমাজের বিশাল অট্টালিকায়
বসবাস করা সভ্য মানুষ দের??


হে দেশমাতা,
তুমিই বলে দাও-
আমরা কাদের বলব?
কাদের কোলে মাথা গুঁজে আমরা
তোমার বীর দের গল্প শুনব??