আমার এই প্রাণে আর শুনি না তোমার শ্বাস!
আমি তো পাথর হয়ে গিয়েছি--
যার ভিতরে পৌঁছায় না পৃথিবীর বাতাস!
কতদিন কাঁধে লাঙল নিয়ে চলে
গেছি মাঠে--ক্ষেতে--ভোর সকালে!
এই নিস্তব্ধ বিকেলে
এখনো মনে পড়ে সেইদিন।
আমার রাস্তা রুখে যেদিন
তুমি দাঁড়িয়েছিলে--------
বলেছিলে,"লাঙল দেওয়ার কী ই বা প্রয়োজন"
হাসি মুখে সেদিন তোমার কথা মেনে কি নেয় নি
আমার এই মন?
তারপর কেটে গেছে কত যুগ--
কেটে গেছে কত বেলা!
নদীর উপর শক্ত ভেলা
ভাসিয়ে চলে গেছি দুজন
নীলাভ সাগর ছাড়িয়ে বহুদূর--আমাজন!
কতবার কড়ইয়ের পাতা গেল ঝরে!
কত বার এই পৃথিবীর পথ ধরে
শীত আসল--বসন্তের রাত গেল কেটে
কোকিলের ডাকে।
কতবার চাঁদের আলো কড়ইয়ের পাতার ফাঁকে
মুখ লুকায়ে চেয়েছিল আমার সেই ক্ষেতে!
যেথায় লাঙল নিয়ে শস্য ফলাব বলে
রওনা দিয়েছিলাম সেদিন!
তারপর চৈত্রের কোনো একদিন
গিয়ে দেখি সেথায়--উত্তপ্ত রৌদ্রের সর্বনাশী তাপে
ফেটে গেছে আমার সাধের ক্ষেত!
কবরের কাছে শিয়ালের মতো ডেকে উঠে কোন প্রেত!
আমার নষ্ট ক্ষেত হয়ে আছে বিরান--
চারদিক শুধু নিস্তব্ধতা--নিস্তব্ধতার বাগান!


তুমিও গেলে চলে
আমার সাধের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেল বলে
আঁধারের হাত ধরে আঁধারের মাঝে!
তবে করেছি কি ভুল তোমায় ভালবেসে?


তুমি আজ পঁচা বাঁশ।
যে বাঁশে লাগে না সন্ধ্যার বাতাস।
যে বাঁশে পড়ে না কোনো কচি শিশুর হাত
কত বছর ধরে--এই নিঃশব্দ রাত---
করুন স্মৃতি--পোকাদের মতো চিবিয়ে খায় আমার মস্তিষ্ক বারবার।
আমি পাথর--আমি কালো পাথর হয়ে যাই আবার!
যে পাথরের প্রাণে লাগে না তোমার গরম নিঃশ্বাস!
যে পাথরের ভিতরে পৌঁছায় না পৃথিবীর আলো বাতাস!