"নেতাজী হয়ে ওটার গল্প "
শীর্ষেন্দু বৈরাগী


১৮৯৭ সালে ২৩ শে জানুয়ারি কটকের "বসু" পরিবারে,
জন্মেছিলেন সে জানকীনাথ ও প্রভাবতী দেবীর হাত ধরে।
৬ মেয়ে ও ৮ ছেলের মাঝে সুন্দর বসু পরিবার সাজে,
ছোট থেকেই স্বদেশের মুক্তি যেন তার  মনের মাঝে।


১৫ বছরেই যার পরা হয়েছিল "স্বামী বিবেকানন্দ",
সময় পেলেই গরীব-দুঃখী মানুষের সেবায় পেত সে আনন্দ।
BA দর্শনের ডিগ্রী, "ICS" চাকরি পারলোনা তাকে থামাতে,
১৯২১ দেশের ডাকে যোগ দিল স্যার চিত্তরঞ্জন দাশের দলেতে।


তারপর ওইযে সাইমন এর বিরোধিতায় উড়িয়ে কালো কাপড়,
প্রভাব ময় বক্তৃতায় ইংরেজ  সরকারের মুখে মারল চাপড়।
১৯২৫ বিদ্রোহী "গোপীনাথের" নিথর দেহ অন্তিম ক্রিয়া কার্য-সাধনে।
মায়ানমারের জেলে বন্দি হলো ইংরেজ সরকারের মিথ্যা বাঁধনে।


১৯২৭ গান্ধীজীর দাবি "Dominion Status" এর সরকার দ্বারা প্রত্যাখ্যান,
যুদ্ধের শঙ্খ ধ্বনি বাজিয়ে মানুষ চেয়েছিল স্বতন্ত্র ভারতবর্ষের সম্পূর্ণ মুক্তিদান।
মানেনি ইংরেজ সরকার সময় গড়িয়ে ১৯৩০-এ,
লাহোর সমাবেশে ঠিক হয় স্বতন্ত্র দিবস পালন হবে প্রতি বছর জানুয়ারি ২৬ এ।


২৬, জানুয়ারি ১৯৩১ কলকাতায় পতাকা উত্তোলনের মাঝে ধেয়ে আসে ভবিষ্যতের বাণী,
স্বাধীনতার স্বপ্নে বয়ে এনেছিল রাম,রহিমের চোখের পানি।
সেদিন চিৎকার করে বলা হয়েছিল দমনকারী শাসকের কথা।
ইংরেজের লাঠি,মানুষের রক্ত লেখা আছে সেদিনের ইতিহাসের পাতা।


১৯৩৩ নানান সমাবেশের মাঝে "মুসোলিনির" সাক্ষাত স্থান ছিল ইউরোপ,
১৯৩৪ বৃদ্ধ পিতা জনকীনাথের উপর পড়লো তার দামাল ছেলের কাজকর্মের প্রকোপ।
পিতার মৃত্যুর খবর শুনে তৎক্ষণাৎ ফিরলেন তিনি দেশে,
ইংরেজ পুলিশ ধরল তাকে আবার ছদ্মবেশে ।


জেলের মাঝে সংগঠন আর চলতে লাগলো টানা অনশন।
ইংরেজ বুঝেছিল যাবেনা দমানো দিয়ে তাদের কঠোর  শাসন ।
সাল ১৯৩৮ এল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি সম্মান।
বুঝেছিলেন স্বাধীনতা কখনোই আসবেনা না দিয়ে বলিদান।


তাই সভাপতি আসনে থেকেই গড়েছিলেন নিজ দল,
১৯৩৯, ফরওয়ার্ড ব্লক যা বিদ্রোহীদের বাড়িয়েছিলো মনোবল ।
১৯৪০,সরকার বিরোধী কাজ কর্মে আবারও গেলেন জেল,
অনাশনে এবার গৃহবন্দি হয়ে পেয়ে ছিলেন বেল।


১৬ জানুয়ারি ১৯৪১ এক মহাম্মদ পাঠানের বেশে,
"মিয়া আকবর শাহের" সাথে পাড়ি দিলো বার্লিন দেশে।
বার্লিনে বিভিন্ন সভা-সমিতির মাঝে তিনি হয়ে ওঠেন "নেতাজি "
হয়তো বলা ভুল হবেনা তিনিই ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের একমাত্র পিতাজী।


এরপর সাবমেরিনে করে সাগরের তলে পৌঁছালেন ইন্দোনেশিয়া,
জাপান সম্রাট দিয়েছিল আশ্বাস বুঝে "নেতাজির" মনের ভাষা ।
সিঙ্গাপুরেরই গড়ে উঠেছিল আজাদ-হিন্দ ফৌজ এর  বীর সেনা,
প্রত্যেক শহীদের বলিদানের এবার হবে হিসাব, থাকবে না কোন দেনা।


"তোমরা আমায় রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব",
গর্জে উঠেছিল দেশ এবার শোষকের থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেব।
"দিল্লি চলো" স্লোগানে জাপানি সেনার সাহায্যে হল আঘাত,
উত্তর-পূর্ব ভারতের সমস্ত ইংরেজ ঘাঁটি হয়েছিল কুপোকাত।


কিন্তু কাল হল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হার-
নেতাজির স্বপ্ন এবার ভেঙে হল চুর-মার।
১৯৪৫ এর ১৮ আগস্ট বিমানে করে মানচুরি যাওয়ার পথে।
মাঝ আকাশেই ধরে নিয়ে গেল চিত্রগুপ্তের শক্তিশালী পেয়াদা তাদের সোনার রথে।


না, মরেন-নি,মরেন-নি তিনি বেঁচে আছেন আজও সমস্ত অন্যায় প্রতিরোধ কারি যুবকের মাঝে।
আবারও আসবেন এবার ইংরেজ নয় দেশদ্রোহী নোংরা রাজনীতি বীদদের খোঁজে ।
সে সময়ের ইংরেজ আর এখন কার কুৎসিত মনের দু-পেয়ে কিছু পশু।
মাতৃভূমিকে এবার যেন তাদের হাত থেকে মুক্ত করতে পারি তোমার আদর্শে,হে বীর "নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু"।