( মাত্রাবৃত্ত ছন্দ > ৬+৬+৬+২ )


ছায়া তলে আমি বুঝবো কি হায় রুদ্রের দাহ দাব ?
অবিশ্রান্ত পরিশ্রান্ত ক্লান্ত চিত্ত ভাব ।
ঘর্ম সিক্ত চর্ম রোদন মর্মে পুছবে যবে ,
ব্যর্থ জীবন সার্থকতার পথ্য বুঝবে তবে ।
আমি তোমায় মাল্য দেই -
দিবস-নিশীথ বিরামহীন যে গড়েছো ভিত্তি এই ।
শ্রম ঘাম দিয়ে গড়ে দিলে যারা ভিত্তি সভ্যতার ,
বিরতিশূন্য হেঁটে গ্যালে পথ রথ করে ছারখার ।
রুদ্র ঝঞ্চা-ঝড় সন্তাপে দিয়ে গ্যালে যারা শ্রম ,
তাঁদের নামটি রচে যাই আমি পলে পলে পালাক্রম ।
কে তুমি আবাল নিয়েছো মাথায় দারুণ উগ্র ভার ?
জীবন সমরে যুদ্ধিছো এক দুর্দম দুর্বার ।
উত্তাপ দিনে কে তুমি বৃদ্ধ ঠেলিছো অকাল ঠ্যালা ?
উন্মুখাকাশ তলেতে খেলছো জীবন-জীবিকা খেলা ,
বৃদ্ধ হয়েছো করে দিয়ে তুমি পৃথিবীকে যৌবন ,
অবল হয়েছো সবল করে এ অবনীকে অনুক্ষণ ।
যাঁদের ঘর্ম-বীর্য ফলের অনুদানে কালে কালে ,
জন্মায় নব-নূতন শিল্প নিভৃতে অন্তরালে ,
যাঁরা দিল এনে পৃথিবীতে গতি কর্ম চপলতায় ,
স্তব্ধ জগত চঞ্চল আজ তাঁদের সফলতায় ।
তবে কেন হয় যুগে যুগে তারা লাঞ্ছিত বঞ্চিত ?
মন নিকুঞ্জে কত না প্রশ্ন কত ব্যথা সঞ্চিত ।
পুঞ্জিত মনে অভিমান লয়ে রচে যাই এক বাণী -
এই অবনীর ভিত্তি দাঁড়ায়ে শ্রমিকের পরে জানি ।
করে যাই গীত-বন্দনা শুধু আমি তার বারেবার ,
শত সাধুবাদ ,প্রণামি যে তারে ;প্রদানি অলংকার ।
আজ তোমায় মাল্য দেই -
আবালবৃদ্ধবনিতার শ্রমবারির সিন্ধুরেই ।
এসো তোমায় মাল্য দেই -
তিল তিল করে গড়ে তুললে যে অবনী ভিত্তি এই ।।