রাতজানা পাখিরা সব ফিরলো নীড়ে
ডানায় রাজ্যের অলসতা, দুচোখে রক্তের ঘুম
পরাজিত সূর্য বুঝি এখনি উঠবে জেগে
আজন্ম অভিশাপ রেশারেশি আলিঙ্গনহীন ভোরের আলোর সাথে ।


এমন ভোরের আলো কিবা প্রয়োজন ছিলো ?
যদি ঠেলে দিবে অন্ধকার নীড়ে
দিবে ডানায় স্থবিরতা, বন্ধুহীন নিঃসঙ্গতা বহুক্ষণ ।


ঝাঁউবন ফিরে পায় চঞ্চলতা কিচির মিচির সুরেলা মিষ্টি গানে
থেমে যায় শেয়ালের ডাক
তবু কোন পোষ মানা পাখির পালকে মুক্তির শিহরণ
                                    একটানা ডেকে চলে সে ।
এক ঝাঁক সাদা বক উড়ে যায় দূর কোন গ্রামে
ডানার ঝাপটায় ঘুম ভাঙে সুর্যের
আরো কিছুক্ষণ ঘুমাবার ইচ্ছা ছিলো তাই
অগ্নি চোখে তাকায় সে পৃথিবীর পানে
বিশ্বয়ে তাকিয়ে দেখে আমি তখনো দাঁড়িয়ে আছি
                              দাঁড়িয়ে আছি তন্দ্রা বিহীন।


আমি তখনো দাঁড়িয়ে থাকি মাথার উপরে জলন্ত সূর্য যখন
দুষ্টু রাখাল ঘুমিয়ে পড়েছে অশ্বথের হেলানো ডালে
গ্রামের মেঠোপথে কিষাণ অপলক তাকিয়ে থাকে
আঁচলে ঢেকে বধু তার আসবে নিয়ে
                             দুমুঠো যা জোটে ।


আমি তখনি দাঁড়িয়ে থাকি
অজস্র সেধস্রোতী খেলা করে সমস্ত শরীর
                            দুর্গন্ধ ছড়ায়;
                                 তখনো !


গোধূলী বেলায় গরু মহিষের ছুটাছুটি
রাখাল তাড়িয়ে নিয়ে আসে বাড়ি
ধুলি আর বালিরা বাতাসে মিশে ধাক্কা দিয়ে আমায় বলে
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আঁধার আসছে তেড়ে
‌সূর্যসেন লুকিয়েছে দূর কোন গ্রামে
তোর কি ভয় নেই, ঘুম নেই দুচোখে
                      তুই কি ফিরবিনা বাড়ি ?
তখনি ঠাট্টার ছলে ক্লান্ত দুচোখ হেসে বলে
আমিও যদি ঘুমিয়ে পড়ি তবে চুরি হবে যে সবার বাড়ি !
তাইতো তখনো দাঁড়িয়ে থাকি
সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে যখন
শুধু আকাশে লক্ষ তারারা জ্বলে
অজানা শঙ্কায় আমি আর অন্ধকার মুখোমুখি বসে থাকি
                                           খেলা করি তার সাথে ।


নিশ্বাসে ইষৎ দুলে ওঠে কাশবন
মাঝে মাঝে কেঁপে ওঠে নদী
তুবও দাঁড়িয়ে থাকি
সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরীর মতো ।