মুজিবর রহমান,
আমি আপনাকে চোখে দেখিনি,
পড়িও নি আপনার 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী—'
কিন্তু,
হ্যাঁ আমার দাদুর মুখে শুনেছি কখনও কখনও
আপনার সংগ্ৰামময় জীবনে'র কিছু কিছু ঘটনার কথা...
কেননা, আমার দাদু জন্মেছিলেন আপনার দেশে,
দেখেছিলেন আপনাকে খুব কাছ থেকেও
অথচ,
আজ দুর্ভাগ্যবশত
সেই জন্মভূমি থেকে ভিটেমাটি চ্যুত...!
তবু, আপনার প্রতি দাদুর ভালোবাসা,
আজও এতটুকুও কমেনি...
বরং, দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে ।


এখনও দাদু মাঝে মধ্যেই,
আমাদেরকে আপনার কথা বলে-
বলে যে,
মুজিবর মানেই
একটি আন্দোলনে'র জীবন্ত মশাল-
মুজিবর মানেই
একটি গণঅভ্যুত্থানে'র আগ্নেয়গিরি-
মুজিবর মানেই
একটি মহাবিপ্লবে'র দূর্ধর্ষ কবিতা-
মুজিবর মানেই
একটি মুক্তিযুদ্ধে'র নির্ভীক কণ্ঠস্বর-


আবার,
কখনও কখনও দেখেছি দাদু মাঝরাতে,
ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে উঠে—
বিড়বিড় করে বলতে থাকে :
— মুজিবর,
তোমার মতোই আমাদের প্রাণে'র বাংলাকে,
পাকিস্তান হানাদার বাহিনী'র দোসর
রাজাকারে'র দল, ছিন্নভিন্ন করে দিল—
কেড়ে নিল আমাদের স্বাধীনতা'র কথা...!


শেখ মুজিবর রহমান,
ক্ষমা করবেন আমাদের—
কেননা, দাদু যখন আপনার কথা বলত :
তখন আর পাঁচটা কথার মতোই শুনে উড়িয়ে দিতাম...!
কখনও গায়ে লাগাতাম না,
এমনকি,
বুঝতেও চাইতাম না আপনাকে—


আজ যখন আপনার একশোতম জন্মবর্ষে :
সারা বাংলাদেশ যখন উত্তাল সমুদ্রে'র মতোন—
তখন সামান্যতম হলেও বুঝেছি,
যে আপনি কোন সাধারণ ব্যক্তি নন...!
আপনি যে সমগ্ৰ বাংলাদেশে'র,
তথা বিশ্বের ইতিহাসে বিরলতম এক বিপ্লবী কিংবদন্তি—
আপনি যে বাঙালি জাতির জনক ।
আপনি যে বরিস পলেভয়ে'র উপন্যাস হতে
বেরিয়ে আসা : 'মানুষে'র মতো মানুষ...!'


যাঁর বর্ণময় জীবনে'র পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিতে গেলে
হাজার হাজার বক্তৃতা'র মঞ্চ,
সেমিনার, এমনকি  জনসভাও কম পড়ে যাবে—
তবু বলা শেষ হবে না...!
কেননা, শেখ মুজিবুর রহমানে'র জীবন যে মহাকাশময়—
যাকে আবার মুখস্থও করা যায় না...!
সমগ্ৰ হৃদয় দিয়ে না পড়লে ।


তাই আজকে'র এই মুজিববর্ষে'ই উঠুক দাবী-
কারো মুখে নয়, কথায় নয়,  
বুকে, সবার বুকে থাকুক :
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান...


..................................................


(রচনা কাল : ১৮ মার্চ ২০২০
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একশো বছর উপলক্ষ্যে ফেসবুকে বেশ কিছু লেখা পড়েছিলাম, পরে আরও বেশ কিছু আলোচনা পড়ে এবং দাদুর মুখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে অনেক কিছু জেনে তার ভিত্তিতেই এই কবিতা লিখেছি )