বাংলা সাহিত্যে গদ্য কবিতার প্রকৃত ধারার শুরু হয় বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাত ধরে । আর তারই পালাক্রমে ধীরে ধীরে এসেছে 'টানা গদ্য কবিতা' । এ ধরনের কবিতার যাত্রা সম্ভবত সত্তর কি আশির দশকের গোড়ার দিক থেকে , মানে বেশি দিনের না ।


বাংলা ভাষায় 'হাংরি আন্দোলন'এর পরপরই এ ধরনের কবিতার প্রচলন ঘটে। কেন ঘটেছে তার উত্তর হয়তবা বাংলাভাষার বৈচিত্র্য প্রিয়তাই হতে পারে অথবা আন্দোলন করে শান্তি না মেলার কারন ও হতে পারে ।


এধরনের কবিতার গঠন সাধারন গদ্য কবিতার মত হয়না , এখানে গদ্য ছন্দ ও কোন প্রকার প্রাধান্য পায় না । বরং কবি মনের ভাবনা ছোট গল্পের মত করে এগিয়ে চলতে থাকে । তবে এটা কি ছোট গল্প ? - না ।


এ কবিতার ভাব প্রকাশ এবং অলঙ্কারের মাত্রা সাধারন কবিতার মতই এবং তা দ্বারা কবিতাই প্রকাশ করে । এ কারনে টানা গদ্যে লেখা এসকল কাব্য ধারা বাংলা ভাষায় কবিতার মর্যাদা লাভ করেছে ।


এধরনের কবিতা লিখেছেন এমন বিখ্যাত কবিদের মধ্যে রয়েছেন - প্রণব পাল ,অলোক বিশ্বাস, শ্যামল জানা, সুজন হাজারী, শিমুল মাহমুদ প্রমুখ ।


এখানে কবি 'অলোক বিশ্বাস'-এর কবিতা 'বৃত্তদ্রষ্টা ' তুলে ধরা হলঃ


#বৃত্তদ্রষ্টা#


রোদ্দুরের সঙ্গে ভাষা বাড়ছে । তোরণগুলো গান পাগলাচ্ছে কবিদের জন্য কবিরা কোনদিনও বাড়ি ফেরেনা  । মানুষেরা ঝমকায় ছুটের পাখি দেখে । জঙ্গল ফেলে জঙ্গলে বাঘ উড়ে গেলে তালিকায় হরো দেখি পাথর শহরেরা । শহরের কোনো রেখাসীমা নেই ব'লে পুরোনো ছেড়ে স্রোতোত্তাল নতুন অনুশাসন মেনে নেই । পারে শুধুই দেহ ? মন নেই ? মনের কথা শুধু চেতনার যেখানে প্রত্যেক লিপির নিজেকে ভেঙে বহুরাগ হ্যাংকারগুলো দেখে নেয় । অনন্য ট্রেন যখন বিস্ময়ে প্রকাশিত হতে হতে নতুন ডানা খুঁজে পায় , আমরা নিবিড়ের যাদুগুলো শুনি । লেজের ঝাপটায় অ্যাকোরিয়ামের কাচঝনঝন হলেও মাছকে হত্যার দুঃসাহস থাকে না । তাকে দেই শিরোপা , দিই গভীর জলের আরোহণ । নতুন রোদ্দুর খেতে আমাদের কোন দ্বিধা নেই । দ্বিধা ও বমিতা শুধু কবিদের ভাষায় । কবিদের বদরক্তেও কোন দুঃখ নেই । মৃত্যুতে কোনো রা নেই আমাদের আছে শুধু ভাষায় । কবিরা যখন সীমারেখা ছাড়িয়ে যায়