কবি,নির্মল খোলা আকাশের মত,
মানবের দুখে সমব্যথী হয়ে সে'ও কাঁদে অবিরত।
মাটির মানুষ জানেনা ধর্ম,বোঝেনা জাতের কথা,
মিলনের সেতু গড়ে দিতে চাই,হৃদ ভরে মানবতা!
অনাচার যেথা,ছুটে যায় সেথা,করে চলে প্রতিবাদ!
সকলের ভেবে রাস্তায় নামে,যেন এক উন্মাদ!
আপোষ করেনি অন্যায় টাকে,মাথাকে করেনি নত,
হোক না শরীর চাবুক আঘাতে শত সহস্র ক্ষত!


ডোমের কুটিরে কাটিয়েছে কত রাত,
সবুজ ধরার হয়েছে সহায় রেখেছে মাথায় হাত।
সে'তো চন্ডাল,চর্মকারের কোনো জন্মের ভাই,
তাদের জন্যে সমাজের কাছে সম-অধিকার চাই।
চাষার গন্ধ মাখতে সে চেয়ে ফেরে কৃষকের সাথে,
ছাগল চড়িয়ে রাখাল হয়েছে ধুধু প্রান্তর মাঠে।
শ্রমিকের বোঝা,নিজ বোঝা বলে তুলেছে নিজের কাঁধে,
মেথরের সাথে করে কোলাকুলি খুশি ভরা আহ্লাদে।
অচ্ছুত যারা,দিয়েছে তাদের মুখেতে অন্ন তুলে,
আদিবাসীদের গান গেয়ে ওঠে মাদলেতে প্রান খুলে।
আর্তের ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বিনিদ্র রাত কাটে,
ছুটে-ছুটে যায় নির্ভীক রুহ্,বাধাহীন শংকাতে!
চাইনা সে কভু নিজের জন্যে আলোকিত দিননাথ,
গরীবের মাঝে দিন কাটে তার,ভালো লাগে নিশি-রাত।


আশীর্বাদ সে প্রভুর দয়ার দানে,
অসংখ্য মাঝে তারা হয়ে জ্বলে নিষ্ঠার আসমানে।
একাকী মায়ের সন্তান সে তো,মাথা রাখে তার কোলে,
দায়হারা হয়ে যায়নি কখনো অন্য জগতে চলে।
কুমারী নারীর সত্য প্রেমিক,লোভহীন ভালোবাসা,
স্বামীহারা যত বিধবা পেয়েছে বেঁচে থাকবার আশা।
বাবা বলে ডাকে অচেনা বুড়োকে রাস্তার পথ মাঝে,
পাড় করে দেয় হাত খানি ধরে পুত্রের সাজ সাজে।
কচি শিশুটাকে জড়িয়ে ধরে সে আত্মার স্নেহ টানে,
চিন্তিত সদা হৃদয় ব্যাকুল বোনেদের কল্যাণে।


কবি অবতার,ভবঘুরে বেশে ঘোরে,
কবি চিরজীবী,মৃত্যুঞ্জয়,যায়না সে কভু মরে।
অহমিকা,ক্রোধ,হিংসার সাথে থাকেনা কখনো মিশে,
রাহাবার হয়ে দেখিয়েছে শুধু সরল পথের দিশে।
হৃদয়ের মাঝে ইনকিলাবের বিজয় নিশান ওড়ে,
কুসুমকলিরা তার চলা পথে স্বাগত জানাতে ঝরে।