সময়ের অবকাশে ভাগের পরিহাসে --- নন্দিনী,
সকলের ঘুমঘরে স্বপ্নের হাত ধরে -- আজ আবার তোমায় দেখলাম !
তোমার শান্ত দীঘল চোখে স্থির জলের মগ্নতা এঁকে -- রাজনন্দিনী,
রোগা শালিকের বিবর্ণ হৃদয়ের -- আরও কিছু স্বপ্ন-সুখ সাজিয়ে রাখলাম
তুমি আসবে বলে, পালে পালে -- লেগেছে বসন্তের হাওয়া,
তুমি দেখবে বলে, ডালে ডালে -- শিউলি, কাশের মেলা,
তুমি শুনবে বলে, কিঞ্চন-অকিঞ্চনের এক সুরে -- সাম্যের এই গান গাওয়া,
তুমি গাইবে বলে, পাখিদের কলাতানে -- মুখরিত সারা বেলা !
জানো নন্দিনী খুব ইচ্ছে ছিল -- আরও কিছুক্ষণ তোমাকে দেখবার,
ইচ্ছে ছিল তোমার ওই বয়সী চোখে-ঠোঁটে প্রেমের চুম্বন চিহ্ন আঁকবার !
কিন্তু হলো আর কই ? -- রবি-নন্দিনী, তুমি যে রবির অংশ,
তাই ছলে-বলে, রূপ-রস-গন্ধে -- প্রেম অনলে পুড়িয়ে আমাকে করেছো ধ্বংস!
অথচ দেখো -- আমি এই ধ্বংস স্তূপের নীচে থেকেও
কোনদিন কিছু বুঝে উঠতে পারিনি ! -- হে নন্দিনী,
কখন যে সাইক্লোন এসে তোমার শরীরি চাওয়া-পাওয়ায় মিশে গেছে,
আমি আজও তা বুঝে উঠতে পারিনি -- হে মায়াবিনী,
তাই আজও ঘুম-ঘোরে, নীলিমার ওই দূরে -- দরজায় কান পাতি,
তুমি আসবে বলে পথ চেয়ে, বুকে হাজার বছরের জমানো  যন্ত্রণা নিয়ে -- রাত জাগি,
এই বুঝি প্রতীক্ষার প্রহর গোনা শেষ হল -- এই আশায়,
যুগের পর যুগ স্বপ্ন সাজিয়ে নন্দিনী আজও আছি তোমার প্রতীক্ষায়,
জানি একদিন তুমি ঠিকই ফিরবে আমার এই নষ্ট নীড়ে,
মরণের আগে-পরে হয়তো কোনো একদিন -- দেখো তুমি ঠিক ফিরবেই আমার এই নষ্ট নীড়ে !