একদিন নাহয় ঠিক এভাবেই,
রঙিন চাদরের সিভিলিস গায়ে জড়িয়ে,
বেরিয়ে পড়বো নগ্ন শহরের কোলাহল ছেড়ে,
দূরে বহুদূরে, কোনো এক নিবিড় অজানায়!
যেখানে অবারিত সবুজ মাঠে,
থাকবে না কোনো প্রতিবন্ধকতার দায় !
যেখানে শিশিরের প্রতিটি স্বচ্ছ স্ফটিক বিন্দু,
অবারিত ভাবে ঝরে পড়বে আকাশের গাঁ বেয়ে !
যেখানে ফড়িং-এর ডানায় থাকবে,
এক অন্যরকম অবাধ স্বাধীনতার সুখ !
অপরাধীর শাস্তিতে যে শান্তি লুকিয়ে থাকে,
ঠিক যেন তাঁরই মতো অবাধ সুখ !
যেখানে ধর্ম নয় কর্মই হবে,
মানুষের বাঁচার একমাত্র অবলম্বন !
যেখানে জাতি, বর্ণ, ধর্মের বিভেদ নয়,
মানুষের মানবতার বিচার করা হবে!
দেখো আমি একদিন ঠিক-ই বেরিয়ে পড়বো,
এই উন্মাদ সমাজের বুক চিরে,
দূরে বহুদূরে, কোনো এমনই এক অজানায়,
যেখানে পাখিরা সত্যের প্রতিনিধি হয়ে,
গেয়ে উঠবে চির প্রশান্তির সাম্যবাদীর গান।
যেখানে ভ্রমরের প্রতিটি গুঞ্জনে,
থাকবেনা কোনো চাওয়া-পাওয়ার বাসনা ।
যেখানে ফুল ফুটবে ফুলের জন্য,
আর মলয়া বাতাস সুরভিত করবে তাঁর সুগন্ধ!
যেখানে ধর্ম উথ্যানকারির সমস্ত ভ্রূণগুলোকে ,
জন্মানোর আগেই নির্বাসিত করা হবে অন্ধকূপে।
যেখানে হিন্দু মুসলমান সত্যিই বাংলা মায়ের,
এক বৃন্তে দুটি তাজা কুসুম-কলি হবে ।
যেখানে কবর-শ্মশান মিলে মিশে দেড় হাত জমিন হবে।
যেখানে অমানুষ নয়, মানুষের শেষ কৃত্য করা হবে ।
সেখানে কি কোনো যৌন ব্যবসায়ীর স্থান হবে ?
তাই দেখো একদিন আমি ঠিকই
এমন এক নতুন পৃথিবীর সন্ধানে,
বাঁকা গায়ের মেঠো পথটি ধরে,
আমি ব্যস্তবহুল নগর ছাড়িয়ে বেরিয়ে পড়বো,
দূরে বহুদূরে নির্জন কোনো এক অজানায়,
যেখানে শুধুই শাস্তি আর শাস্তি অনাবিল রবে !
রক্তের হোলি যেখানে চিরকাল ম্লিহমান রবে,
যেখানে মরুভূমির উত্তপ্ত বালুরাশি জুড়ে,
ছড়িয়ে থাকবে আগামীর ডাক!
যেখানে বরফের আগুনে জ্বলে উঠবে,
অদম্য ইচ্ছাশক্তির বিলুপ্ত বাসনারা।
যেখানে পথিকের দুদন্ড সুখ মিলবে,
সোনাঝুরি কিংবা বট-অশ্বথের তলে।
আমি একদিন ঠিক সেই অজানার সন্ধানে,
এ জগতের সকল বাধা-বিপত্তির শিকল ছিন্ন করে,
বেরিয়ে পড়বো সেই নতুন পৃথিবীর সন্ধানে !