নন্দিনী সেদিনও তুমি একটা গোলাপ চেয়েছিলে,
তোমাকে একটা রক্ত গোলাপ দিয়ে বলেছিলাম,
" তুমি আমার বনলতা সেন,
আমার শেষের কবিতা!
হৃদয়ের ক্যানভাসে এঁকে রেখেছি,
নন্দিনী তোমার ছবিটা,
সব সময় থাকে যেন তোমার মুখে হাসি,
নন্দিনী তোমাকে আমি বড্ড ভালোবাসি ! "
তুমি আলতো করে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলে,
আর একবুক আগ্রহ নিয়ে বলেছিলে,
" আচ্ছা গোলাপ এত লাল হয় কেন ? "
আমি বলেছিলাম, " এটা গোলাপ নয়!
ব্লুটিং পেপারে আমার রক্ত শুষে এনেছি । "
তুমি রেগে গিয়ে বলেছিলে,
" আমি তো রক্ত চাইনি!
চেয়েছিলাম একটা রক্ত গোলাপ। "
আমি হাসতে হাসতে বলেছিলাম,
" আমিও তো রক্ত গোলাপই দিয়েছি ! "
মনে পড়ে সেদিনের তোমার বলা কথা ?
" আজকে আমি তোমার প্রতি,
করবো কিছু পাগলের মত প্রলাপ:
ভালোবাসতে পারি তোমায়,
আনো যদি একটি রক্ত গোলাপ । "
কিন্তু বিশ্বাস করো আমার কাছে,
গোলাপের বাগান আছে, কিন্তু ফুল নেই !
পড়ে আছে শুধু সুতিক্ষ্ণ কাঁটা!
আর বাগানে ছড়িয়ে আছে রক্ত ।
আর থাকার মধ্যে ছিল একটুকরো ব্লুটিং পেপার !
তাইতো ভালোবাসা হারানোর ভয়ে,
ব্লুটিং পেপারে আমার রক্ত শুষে তোমাকে,
একটা রক্ত গোলাপ বানিয়ে দিয়েছি ।
তুমি খুশি হওনি নন্দিনী ?
হয়তো খুশি হওনি, আর তাই,
তুমি রেগে চিৎকার করে বলেছিলে,
" আমি রক্ত চাইনি !
চেয়েছি রক্ত গোলাপ ! "
আমি অট্টহাসি হেসে বলেছিলাম,
" আমিও গোলাপ চেয়েছিলাম!
চেয়েছিলাম একটু ভালোবাসা.
এর থেকে বেশি কিছু তো চাই নি:
কিন্তু বিনিময়ে বারবার পেয়েছি কষ্ট,
অঝরে ঝরিয়েছি রক্ত,
তৈরি হয়েছে একটা রক্ত নদী,
আর বয়ে গেছে গোলাপের বাগান দিয়ে,
আমি সেই সব ঝরে যাওয়া রক্ত শুষে বানিয়েছি,
এক-একটি রক্ত গোলাপ !
কিংবা বানিয়েছি রক্তজবা.
তুমি আর শুনতে পারছিলে না!
তাই আমাকে থামতে হয়েছিল সেদিন,
আজ আবার 7-ই ফেব্রুয়ারী,
গোলাপ দেওয়ার সেই দিন,
আজ সত্যিই আমার বাগানে গোলাপ ফুটেছে!
সদ্য ফোটা একটি রক্ত গোলাপ,
যেনো তোমার জন্যই তাঁর ফোটা,
হাতে নিয়ে দাঁড়াবো আজ তোমার সামনে,
রক্ত গোলাপ তোমার দিকে বাড়িয়ে,
নিশ্চুপ থাকবো দাড়িয়ে,
শুধু বলবো, " ভালবাসি তোমায় প্রিয়তি " !
আজ কি দুহাত বাড়িয়ে নেবে,
এই রক্ত গোলাপ ?
নাকি বলবে ফিরে যাও,
তোমার কথা শুধু পাগলের প্রলাপ ।
আজ কি আবার ফিরিয়ে দিবে আমায়,
গোলাপের কাঁটায় মনকে বিদ্ধ করে ?
নাকি একচিলতে হাসি মুখে,
হাত বাড়িয়ে রক্ত গোলাপ নিয়ে,
বলবে, " ভালবাসি ভালবাসি!
শুধু তোমাকেই ভালোবাসি ! "