১৫১ বছরের
"পুরোনো মিছিলে পুরোনো ট্রামেদের সারি"—
আজ তাদের পরিষেবা বন্ধ।
কলকাতা শহরে ট্রাম আর চলবে না
(যদিও চলবে শুধু ধর্মতলা থেকে ময়দানে)।
আর সে ছবি দেখা যাবে না—
ব্যস্ত রাস্তায় কতকগুলো গাড়ির সঙ্গে
লাইনের ওপর ছুটছে কলকাতার ঐতিহ্য
(কিছু গাড়ি সেই লাইনের ওপর ছোটে আজকাল)।
ইতিহাস হয়ে যাবে সেই ঐতিহ্য, হেরিটেজ।

ট্রামের খারাপ দিক—
যানজট, স্পেসের অভাব
(সেই কারণেই পরিষেবা বন্ধ)।
কিন্তু ভালো দিক—
এটা পরিবেশবান্ধব।

পুরোনো কিছু ছবি ও ক্লিপ দেখলে মনে হয়—
"ইশ! আগে যেভাবে ট্রাম চলত,
এখনো যদি সেইভাবে চলতে পারতো..."
"আমি অন্তত যদি একবার ট্রামে চড়তে পারতাম..."
আমি কোনোদিন ট্রামে চড়িনি, শুধু চলতে দেখেছি।
শেষবার দেখেছিলাম মল্লিকবাজারে
মাধ্যমিকের সময়ে।
মনে মনে বলেছিলাম—
আমার ট্রামে চড়তে ইচ্ছে করছে।
মনে রাখা হবে সেই ইচ্ছা, সেই ঐতিহ্য।
আমি একা নই,
অনেকেই আছে যারা কখনো ট্রামে চড়েনি।

আমি যদি একদিন ট্রামে চড়তাম,
সিটে বসে জানলায় মুখ রেখে দেখতাম
কলকাতার অলিগলি।
দেখতাম বাস, অটো, ক্যাব, ট্যাক্সির জানলা থেকে
মানুষ ট্রাম চলাচল দেখছে উৎসুকভাবে।

পরবর্তী প্রজন্ম যদি জানতে চায় আমাদের কাছ থেকে
কলকাতার এই ঐতিহ্যের ব্যাপারে,
আমরা কি বলতে পারবো—
"আগেকার সময়ে ট্রাম খুব চলতো,
সুন্দর করে তুলতো শহরের ব্যস্ত রাস্তাঘাট।
সময়ের সাথে সাথে তাদের চলাচল কমেছে,
বেড়েছে মেট্রোর চলাচল।
কিন্তু কোনো একদিন সেই ট্রাম পরিষেবা বন্ধ হয়েছিল"?
একটু হতাশ লাগে ট্রামের কথা ভাবতে, হেরিটেজের কথা ভাবতে।
এমনকি, যারা কলকাতা বলতে বোঝে ট্রাম,
তাদের কী প্রতিক্রিয়া থাকবে?

যাই হোক,
শহরে মেট্রো, বাস, অটো, ক্যাব, ট্যাক্সি চলার যুগে
হারিয়ে যাওয়া ১৫১ বছর বয়সী ঐতিহ্য
মনে রাখা হবে,
মনে থাকবে
সময় যতই পাল্টে যাক না কেন।


(২৪/০৯/২০২৪)
মালদা