গুটি গুটি পায়ে বছর চারেকের ছেলেটি প্রবেশ করেছিল জিয়াগঞ্জ নামক মফঃস্বলের মূর্চ্ছনা সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে, ঠোঁটের মাসুম হাসি ঘিরে রবিবারের সকাল স্বপ্ন দেখেছিল এক সুদূর রঙীন ভবিষ্যতের। নৌকার দাঁড় বেয়ে সকাল গড়িয়ে বিকেলের ঐতিহ্যে সেজে উঠছিল গঙ্গার দুই পাড়, প্রতিদিনের মতো কাদা মাটি মেখে হৈ হৈ করা শিবতলাঘাটের অঙ্গনে ধীরে ধীরে বড় হচ্ছিল সেদিনের ছোট্ট সোমু। গিটারের প্রতিটি তারের সাথে তবলার প্রতিটি বোলের একাগ্রতা এক অনন্য সুরে বাঁধতে থাকল সেই স্বপ্নকন্ঠকে, কখনো সাঁতরে গঙ্গা পাড় অথবা প্রথম সিগারেট ধরানো আগুনের স্ফুলিঙ্গে অঙ্গীকার ছিল পৃথিবীকে কিছু উপহার দেওয়ার। সেবার নেহালিয়ায় গান গেয়ে মাত করেছিল সুরেলা কন্ঠের ছেলেটি, সঙ্গীত গুরুর আশীর্বাদ সমস্ত বাধাবিপত্তির পাষান চূর্ন করে তাকে প্রকাশ করল বড় পর্দার সন্মুখে, মুখরিত হল মানুষের কন্ঠস্বর তার সুরের বন্ধনে, মাঝখানের অপ্রতিফলিত লড়াইগুলোর একেকটি পরমানু স্মৃতি হয়ে আজও লুকিয়ে আছে মূর্ছ্ছনার ইট কাঠ বালি ও কংক্রিটের অন্তরালে। সেখানে আজও মন দিয়ে শুনলে দৃপ্তকন্ঠের যে সঙ্গীত মাধুর্য পাবেন তার দেওয়াল থেকে প্রতিমুহুর্তে প্রতিধ্বনিত হবে যার নাম সেই আজকের অরিজিত সিং।