মা আমার মা,
আটপৌড়ে শাড়ির গিঁটে শক্ত গ্রানাইট বাস্তব।
কুঁচির পরতে পরতে জন্মান্তরের নীরবতা
সংসারের মঙ্গলঘট পাছে নড়বড়ে হয়!
দু'ঠোঁটের আগল অপরাহ্ণ সূর্যালোকে নিশ্চুপ যখন
ঠিক তখুনি আমাদের চার ভাইবোনের দাপুটে দখল খুবলে খেয়েছে তোমার বিশ্রামের সময়টুকু।
ম' ম' শ্বাসাঘাতে স্পষ্ট বুঝতে পারি সেদিনের সেতারের ছেঁড়া তারগুলিতে তুমি কিভাবে বেহাগের সুরারোপ করেছিলে।
মাঝে মঝে মনে হয়নি এমনটাও না,
তালপাখার হাতখানিতে অনবরত যুগিয়ে চলেছিলে আমাদের বাঁচাবার কসরত।
কোল থেকে আঁচল অবধি অন্যকে সুখী করার পথ চলতে তুলসী তলার মতো নতজানু জীবনভোর।
তিলে তিলে নিঃস্ব হয়ে  চলেছিলে  নির্বিবাদে অবিন্যস্ত চলনের মানানসই পদক্ষেপে
বুকভরা সুধামন্ত্র বিলিয়ে একা কেবল পুড়ে গেলে গনগনে উনুনের আঁচে।
বাবার রেখে যাওয়া শূন্য মাঠে ভরদুপুর মাথায় নিয়ে তুমিই বেড়ে দিলে সানকি থালায় গরম ভাতের গন্ধ।
পলে পলে বুঝিয়ে দিয়েছো মা'র জাত ধর্ম থাকতে নেই।
চার চারটি অনাথ সন্তানের ভার তোমার হাতে সঁপে দিয়েই তো বাবা বিধর্মী প্রমাণিত হয়ে চারটি গুলি বুকে নিয়ে চলে গেলেন গ্রহান্তরে।
তুমিও অজুহাত দাওনি মা, অন্য জঠরের জাতক পালনকথায়।
তোমার নিকোনো উঠানে আজ আনন্দডানা মেলে ধরলাম আর সেইমাত্র তুমি চলে গেলে পারিজাত কাননের পৌষালি আঙ্গিনায়
মা, আমার মা,একী সুধারস তব!