খুব হ্যাংলা একটা লোক
সারাদিন চকচকে লোভী লোভী চোখ
এর তার কান ভারী করে
তারপর নারদ নারদ বলে নখে ঘষে নখ।
আমার আদরের সজনে গাছটা
এবছর সব ডাল উজাড় করে ফলিয়েছে ডাঁটা।
হ্যাংলাটা রোজ এসে চায়
সেয়ানা আমিও, আজ দেবো, কাল দেবো,
বলে বলে করে দেই বিদায়।
আমি কিনা সারাদিন এক করে
উনুনে নুনের মাপ ধরে
কবিতায়, গানে ও বাগানে-
একে হ্যাংলা তায় নিন্দুক
ওকে কেন শুধু দেবো আমার সজনে?
চারপাটি দাঁতে রোজ ছিঁবড়ে সাজাই
কানে বাজে," একটাও খাওয়াবিনা? না খেয়ে যদি মরে যাই?"
স্বাদ আরো বেড়ে যায় সজনে ডাঁটার
চিবিয়ে জব্দ করি হ্যাংলা ব্যাটার
শেষ ডালে বুড়ো ডাঁটা দুলছে ক'টা
হঠাৎ টিভিতে ব্রেকিং নিউজে সাড়ে বারোটা
ভেঙেছে উড়ালপুল, হত শতাধিক
ওই তো হ্যাংলাটা,দু-দুটো গাড়ি মাঝে চাপা পড়ে ঠিক
চকচকে চোখে চেয়ে ধীরে ধীরে স্হির
পুলের লোহার দাঁত ছিঁবড়ে করেছে ওর পুরোটা শরীর।
শেষ ডালে বুড়ো ডাঁটা দুলছে তখনও,
টিভি স্ক্রিনে সার সার লাল লাল সজনে ডাঁটাই
বেজে চলে কানে," একটাও ডাঁটা খাওয়াবিনা? যদি মরে যাই?"
সপ্তাহে একটা দিন যেতো কলকাতা
নিয়মমতো অন্ধ মেয়ের হোমে
ভোলা আদক, অন্ধ মেয়েটির হ্যাংলা ও নিন্দুক পালক পিতা।


** কবিতাটি কলকাতার বড়বাজারে উড়ালপুল ভেঙ্গে পড়ার স্মৃতি থেকে লেখা।